
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
হলুদ শাপলা ফুল! অনেকেরই অজানা-অচেনা। ফুলটি যতই অপরিচিত হোক না কেন, এই ফুল দীর্ঘদিন ধরে ফুটে আসছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন চৌবাচ্চায় শোভা পাচ্ছে বিরল সৌন্দর্যের এই ফুল।
গাঢ় সবুজ পাতার সঙ্গে উজ্জ্বল হলুদ রংয়ের ফুল, সঙ্গে নীলাভ রঙের ডাটা। ২০১৯ থেকে ক্যাম্পাসে সৌন্দর্যে অনন্যমাত্রা যোগ করেছে এই বিদেশি ফুল। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দীনের সময়ে গাছটি ঢাকার এক ব্যক্তিমালিকানাধীন নার্সারি থেকে আনা হয়। তবে প্রতিকূল পরিবেশে গাছটির টিকে থাকা বিস্তার একেবারে হুমকির মধ্যে ছিল। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালী রোনাদ চন্দ্রের একান্ত প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায় গাছটি বর্তমানে বেশ ছড়িয়ে পরেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন দক্ষিণ– পশ্চিম কোণায় বিশালাকায় দুটি চৌবাচ্চার মধ্যে সোভা পাচ্ছে এই শাপলা ফুল। একটিতে এই হলুদ ম্যাক্সিকান শাপলা থাকলেও আরেকটিতে দেশি লাল শাপলা লাগানো হয়েছে। তবে লাল শাপলা থেকে হলুদ শাপলার বিস্তৃতি লক্ষণীয়। সুষ্ঠু পরিচর্যা আর নিয়মিত দেখভালের মাধ্যমে দিনদিন বেড়ে চলছে সৌন্দর্য বর্ধক এই গাছ। সারাদিন রঙবেরঙের প্রজাপতির পরাগায়ণ আর কুনোব্যাঙের জলকেলিতে মেতে থাকে শাপলা ফুল ঘেরা এই আঙিনা।
এ বিষয়ে মালী রোনাদ চন্দ্র বলেন, গাছটিকে অনেক কষ্টে সংরক্ষণ করেছি। প্রথমে মাটির বড় ভাঁড়ে লাগিয়েছিলাম। পরে গাছটি মরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে এই হাউসে স্থানান্তর করা হয়।
হলুদ শাপলা নিয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি আরো জানান, ক্যাম্পাসের আরো দুটি জায়গায় গাছটি রোপণ করব। একটি প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন, আরেকটি ক্যাফেটেরিয়ার গেটে। এরই মধ্যে আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। আমরা গাছটিকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
জানা যায়, বর্ণিল রঙের এই মূল নাম Nymphaea mexicana. স্থানভেদে একে হলুদ শাপলা, মেক্সিকান ওয়াটারলিলি থাই শাপলা ও বানানা ওয়াটারলিলি নামে ডাকা হয়। উদ্ভিদটি প্রথম মেক্সিকোতে আবিষ্কৃত হয়েছিল, যা প্রজাতির নামের জন্য দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের মালীরা ফুলটিকে থাই শাপলা হিসেবে চিনেন। থাইল্যান্ডে ইনডোর প্লান্ট বা গৃহ অভ্যন্তরীণ গাছটির প্রথম চাষ শুরু হয়। পরে ক্রমান্বয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পরে। সৌন্দর্যে স্বর্গীয় দ্যুতি ছড়ানো এই ফুলগুলো দুপুর থেকে শেষ বিকেল পর্যন্ত খোলা থাকে। রাতে বন্ধ হয়। যখন গাছগুলো ভিড় করে, তখন পাতাগুলো জলের উপরে উঠতে পারে। ফুলগুলোতে পুরু রাইজোম এবং লম্বা, স্পঞ্জি লতানো স্টোলন থাকে। যেগুলো ছোট ছোট কলার মতো ছোট হলুদ শিকড়ের গুচ্ছ বহন করে। গাছটি চারা থেকে বাড়তে পারে বা এর স্টোলন থেকে নতুন অঙ্কুর গজাতে পারে। বড়, চ্যাপ্টা পাতাগুলো বেগুনি বা বাদামী প্যাটার্নিংসহ সবুজ এবং জলের উপরিভাগে ভেসে থাকে। এটি জলাভূমিতে বেড়ে ওঠে।
Posted ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin