নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
বর্ষার আগেই আগ্রাসী রূপ নিয়েছে পদ্মা। উত্তাল হয়ে ওঠা এ নদী এখনই গিলে খাচ্ছে বাড়িঘর, ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট ও গাছপালা।
এরই মধ্যে পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজংয়ে বেজগাঁও গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন, ওসমান গনি ও বাদশা মিয়ার বাড়ি। পদ্মা তীরে বাস করা হাজারো পরিবার এখন তাদের মতোই দিশেহারা।
বেজগাঁওসহ উপজেলার বড়নওপাড়া, সুন্দিসার ও গাঁওদিয়া গ্রামে বুধবার (১৭ মে) রাতে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে বিস্তীর্ণ জনপদ। আকস্মিক এ ভাঙনে পদ্মাপাড়ের মানুষের চোখে ঘুম নেই। আতঙ্কে আছেন তারা। অনেকেই গাছপালা কেটে নিচ্ছেন। আম পাকতে শুরু করেছে সেই গাছও পদ্মায় হারিয়ে যাচ্ছে কিংবা হারিয়ে যাওয়ার মুখে কেটে নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। যুগ যুগ আগের সাজানো-গোছানো ঠিকানা যেন নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম!
এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভাঙনরোধে চূড়ান্ত অনুমোদন প্রক্রিয়ায় রয়েছে নতুন প্রকল্প।
ভাঙনকবলিত বেজগাঁও গ্রামের জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমাগো সব শেষ!। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা নিল না। আর পদ্মা থেকে অবৈধ বালু লুট করে এখনো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাজার হাজার বাল্কহেড়ে করে। এতে ভাঙন আরও বাড়ছে।’
নীরব হোসেন নামে একজন বলেন, ‘তীরে এসে তরী ডোবার অবস্থা! প্রকল্প গ্রহণ করার পরও আমরা ভাঙনের মুখে। কেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।’
মনিরা বেগ নামে আরেকজন বলেন, ‘সরকার ভাঙন রোধে কোটি কোটি টাকা দিছে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড সময়মতো কাজটা না করায় আমাগো সর্বনাশ হচ্ছে।’
১৯৯২ সাল থেকে পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে লৌহজং উপজেলা সদরসহ ৪০ গ্রাম এবং টঙ্গীবাড়ি উপজেলার ১০ গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে।
মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘৪৪৬ কোটি টাকার পদ্মার তীররক্ষা বাঁধ প্রকল্প চলমান রয়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ বাঁধ নির্মাণ শেষ হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। কাজের অগ্রগতি ২০ শতাংশ। তবে নতুন এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়ায় আরও ৩২ কোটি টাকার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।’
মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, ‘পদ্মার ভাঙন থেকে
লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলাকে রক্ষায় সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড বর্ষার আগেই ভাঙনপ্রবণ এলাকার কাজ শেষ করার আহ্বান জানান সংসদ সদস্য।
তিনি বলেন, ‘লৌহজংয়ের খড়িয়া থেকে টঙ্গীবাড়ির দিঘিরপাড় পর্যন্ত ৯.১ কিলোমিটার এলাকায় প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এর বাইরে দেখা দিয়েছে ভাঙন। তাই আরও সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় ভাঙনরোধে প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিগগির বাকি অংশের কাজও শুরু হবে।
Posted ২:৫২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ মে ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin