
নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে এ পরিস্থিতি দ্রুততম সময়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
সোমবার বিকেলে তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ের কারণে সবার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যা সবারই জানা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আপনাদের অজানা নয়, করোনা মহামারির ধাক্কা, পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস ওয়েলসহ সবকিছুর মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, সেইসঙ্গে প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যে সংকট এখনো চলমান রয়েছে।
শুধু তাই নয়, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি- গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস ওয়েল আমদানিতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে। ফলশ্রুতিতে বর্তমানের এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং।
আশা প্রকাশ করে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা খুব দ্রুতই জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিচল নেতৃত্বে দিনরাত পরিশ্রম করে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ২০০৮ সালেও মাত্র ৪৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেতেন, সেখানে আজ শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। যা বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় নজিরবিহীন ঘটনা। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে জাতীয় অর্থনীতি ও সব ধরনের উৎপাদনে অভাবনীয় গতি এসেছে। এতে দেশজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ।
এই চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিগত এক যুগে আমরা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি ৫ গুণেরও বেশি। বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭,৩৬১ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)। ফলে উৎপাদন সক্ষমতার দিক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের নজিরবিহীন ঊর্ধ্বগতির কারণেই আমরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে গেছি। আমি সর্বোপরি আপনাদের ভোগান্তিতে দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে আশ্বস্ত করতে চাই, এ পরিস্থিতি সাময়িক। খুব দ্রুতই আমরা ভালো অবস্থায় ফিরে আসবো।
২০০৮ সালেরও আগের কথা স্মরণ করে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, অনেকের মনে থাকার কথা ২০০৮ সালের আগে সারাদেশে দিনে ১৬-১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকতো না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। আশা করি আপনাদের সেই আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। সবাই মিলে আমরা দ্রুততম সময়ে এই ভোগান্তি পাড়ি দিতে সমর্থ হব বলে আশা প্রকাশ করেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
Posted ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ জুন ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin