বিশ্ব বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নড়াইলে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু, নড়াইল প্রেসক্লাবের সভাপতি এনামুল কবীর টুকু, সাধারণ সম্পাদক শামীমূল ইসলাম টুলু, সহকারী অধ্যাপক মলয় কান্তি নন্দী, সুলতান কমপ্লেক্সের কিউরেটর তন্দ্রা মুখার্জ্জী, এস.এম সুলতান বেঙ্গল আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ অনাদী বৈরাগী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শেখ হানিফ সহ অনেকে।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, শিল্পী সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আগামী ১০ আগস্ট জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সুলতান কমপ্লেক্সে শিল্পীর মাজারে পুস্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া মাহফিল, মিষ্টি বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালন করা হবে।

এদিকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ১০ আগস্ট এস.এম সুলতানের জন্মশতবর্ষ হিসেবে উল্লেখ করে নড়াইলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা হাতে নিয়েছে।

সুলতান কমপ্লেক্স ও জেলা শিল্পকলা অডিটোরিয়ামে এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্পীর মাজারে পুস্পমাল্য অর্পণ, শিল্পীর কর্মের ওপর ১শ ফুট লম্বা শিশুদের অংকিত চিত্রকর্ম প্রদর্শনী, বরেণ্য চিত্রশিল্পীদের অংশগ্রহণে আর্টক্যাম্প, শিশু চিত্রকর্মশালা, শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, শিশুদের নিয়ে নৌকা ভ্রমণ, শিল্পী এস এম সুলতানের চিত্রকর্মের পর্যালোচনা, আলোচনা সভা ও শিল্পীর জীবনের ওপর প্রামাণ্যচিত্র ‘আদমসুরত’ প্রদর্শন।

এস এম সুলতান সংগ্রহশালার কিউরেটর তন্দ্রা মুখার্জি জানান, নড়াইলে শিল্পী সুলতানের সমাধিস্থলে জন্মদিন হিসেবে ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট লেখা রয়েছে। নড়াইলবাসীও এ দিনটি হিসেবে অনুষ্ঠান করে থাকে। তবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ১৯২৩ সালের ১০ আগস্ট শিল্পী সুলতানের জন্মসাল ধরে এবার জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে। বিভিন্ন বই-এ শিল্পীর জন্মদিন হিসেবে ১৯২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর লেখা রয়েছে।

তিনি বলেন, ১০ আগস্ট শিল্পীর জন্মদিনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খানসহ খ্যাতিমান চিত্রশিল্পীরা শিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।

চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইলের মাছিমদিয়ায় বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। চিত্রশিল্পের মূল্যায়ন হিসেবে এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক, ১৯৮৪ সালে রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননাসহ ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন। অসুস্থ অবস্থায় ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান। নড়াইলের কুড়িগ্রামে সুলতান কমপ্লেক্স চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন এসএম সুলতান।