
নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১৩ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট
শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় ঘেরা তিনটি উপজেলার লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে থোকায়-থোকায় ঝুলছে লটকন। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে কাণ্ড ও ডালে-ডালে ঝুলে আছে লটকন। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, চাষাবাদে কম খরচ, কম পরিচর্যা ও লাভজনক হওয়ায় পাহাড়ে লটকনের আবাদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
শ্রীবরদীর কালাকুমা গ্রামের কৃষক হাসান মিয়া জানান, স্থানীয় বাজার ছাড়াও ঢাকাসহ অন্য জেলাগুলোতে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মিষ্টি ও রসালো ফল লটকনের। পাশাপাশি খরচ কম ও অল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় পাহাড়ে বাড়ছে এই ফল চাষের আগ্রহ।
বাগান মালিক মোতালেব মিয়া জানান, প্রতিটি লটকনের বাগান বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত।
ঝিনাইগাতীর বাউসা গ্রামের লটকন চাষি হামিদুল্লাহ জানান, তিনি ২০০৭ সালে নরসিংদীর ওজিলাব গ্রাম থেকে ১২০টি চারা নিয়ে আসেন। ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো ৩৫টি গাছে ফল আসা শুরু করে। তারপর ২০১৬ সাল থেকে সব গাছেই ফল আসলে পাইকারদের কাছে বিক্রি শুরু করেন। আর এ বছর ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বাগান বিক্রি করেন তিনি।
তিনি আরো জানান, বাড়ির পিছনে ছায়াযুক্ত পতিত জমিতে গাছগুলো রোপণ করেন তিনি। এ গ্রামে এখন ছোট-বড় আরো বেশ কয়েকটি বাগান রয়েছে। এছাড়া পাশের নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলাতেও কয়েকজন চাষি এবার লটকনের বাগান করেছেন। আগামীতে ফলন আরো বাড়বে বলে তিনি আশা করছেন।
জেলা কৃষি বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিবানী রাণী নাথ বলেন, গারো পাহাড়ের মাটিতে লটকন চাষের প্রায় সব গুণাগুণ রয়েছে। তাই এসব পাহাড়ি গ্রামে লটকনের আবাদ ভালো হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, দেশে বর্ষা মৌসুমের অন্যতম ফল লটকন। লটকন গাছে শীতের শেষে ফুল আসে এবং জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেবর মাসে লটকন পাকে।
তিনি আরো বলেন, যে কোনো ফলের চেয়ে লটকন চাষ লাভজনক। এর স্বাদ টক-মিষ্টি। এখন ফলটি বাজারে বেশ দেখা যাচ্ছে এবং দামও চড়া। চাষাবাদে কম খরচ, কম পরিচর্যা ও লাভজনক হওয়ায় গারো পাহাড়ে লটকনের আবাদ বেড়েই চলছে। সবসময় চাষিদের পাশে থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ।
Posted ৭:০১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৩ আগস্ট ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin