সোমবার ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আফগানিস্তানে কার্যক্রম গোটাচ্ছে জাতিসংঘ?

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

আফগানিস্তানে কার্যক্রম গোটাচ্ছে জাতিসংঘ?

তালেবান ২০২১ সালে ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা একে একে কেড়ে নিচ্ছে। সর্বশেষ আফগান নারীদের জাতিসংঘের হয়ে কাজ করা নিষিদ্ধ করেছে। এতে ক্ষুব্ধ জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী মাসের মধ্যে তালেবান স্থানীয় নারীদের সংস্থাটির জন্য কাজের অনুমতি না দিলে আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার মতো ‘হৃদয়বিদারক’ সিদ্ধান্ত নেবে জাতিসংঘ। আর এ জন্য প্রস্তুতি রয়েছে। খবর: দ্য গার্ডিয়ানের।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রধান আচিম স্টেইনার বলেন, চলতি মাসে স্থানীয় নারীদের কাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের বিষয়ে তালেবান নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন জাতিসংঘের কর্মকর্তারা। কিন্তু এতে আশানুরূপ ফল মেলেনি। এ কারণে আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে জাতিসংঘ।

আফগানিস্তানে মাঠ পর্যায়ে ত্রাণ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন নারী কর্মীরা। বিশেষ করে সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল নারীদের চিহ্নিত করতে কাজ করেন তাঁরা। আফগানিস্তানে সাহায্য সংস্থায় কাজ করা নারীদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ স্থানীয়। আফগানিস্তানে জাতিসংঘের নিযুক্ত ৩ হাজার ৩০০ জন আফগানের মধ্যে ২ হাজার ৭০০ পুরুষ এবং ৬০০ নারী রয়েছেন। গত ১২ এপ্রিল নিষেধাজ্ঞার পর থেকে তাঁরা বাড়িতেই থাকছেন।

এ দিন তালেবান ঘোষণা দেয়, জাতিসংঘের নিযুক্ত আফগান নারীরা আর কাজ করতে পারবে না। এই ঘোষণায় সাহায্য কর্মীরা শঙ্কা করছেন, নারী কর্মীদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপে জাতিসংঘের কাছে তাদের সংকটের বিষয়টি গুরুত্ব হারাবে। এমনকি, অনেক দাতা দেশ ও সংস্থাও আফগানিস্তানের মানবিক সহায়তা কর্মসূচিগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।

তবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, তাঁরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং নারী কর্মীদের বেতন দেওয়া হবে। ২০০ নারীসহ জাতিসংঘের ৬০০ জন শক্তিশালী আন্তর্জাতিক কর্মী তালেবানের ফতোয়ার বাইরে রয়েছেন।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ইসলামিক আমিরাত জাতিসংঘের কার্যক্রমে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে চায় না। বরং, তারা সবার কাছে একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চায়, তা হলো– এটি আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়, যা কারও জন্য সমস্যা তৈরি করছে না।

আচিম স্টেইনার বলেন, আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার মতো হৃদয়বিদারক সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। যদি ধরে নিই, আজ থেকে জাতিসংঘ পরিবার আফগানিস্তানে নেই, তাহলে আমার সামনে লাখ লাখ তরুণ-তরুণী ও তাদের মা-বাবার ছবি ভেসে উঠবে, যাদের খাবারের জন্য তেমন কিছুই নেই। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পরও জাতিসংঘ এবং অন্য দাতা সংস্থাগুলো আফগানদের খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা দিয়ে আসছে। জাতিসংঘের প্রত্যাহারের বিষয়টি এমন সময় এলো, যখন কোনো কোনো সংস্থা দেশটিতে কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ভাবছে।

এদিকে আগামী ১ ও ২ মে কাতারের রাজধানী দোহায় আফগানিস্তানের বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক বৈঠক আহ্বান করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব। জাতিসংঘ জানিয়েছে, তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে দরিদ্র আফগানের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৩ কোটি ৪০ লাখ হয়েছে। এই তথ্য জানানোর পর দিন গতকাল দোহা বৈঠকের ঘোষণা এলো।

গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকের বরাত দিয়ে বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে রাষ্ট্রদূতরা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ‘উন্নয়নের টেকসই পথ’ খুঁজবেন। বৈঠকে নারীদের ওপর তালেবান কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞাসহ উদ্বেগের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:৫১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২১ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(237 বার পঠিত)
(204 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]