নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০২ মে ২০২৩ | প্রিন্ট
সিরিয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। কিছু দিন আগেও দেশটির বিমান বন্দরে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল। এই হামলার ফলে সিরিয়ার ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
মঙ্গলবার (২ মে) ভোরে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়। এতে নিহত হয়েছেন এক সিরীয় সৈন্য। এবং আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন। এই হামলার পর আলেপ্পো বিমানবন্দরের প্রতিদিনের সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিনের আলো ফোঁটার আগেই চালানো ওই হামলায় এক সিরীয় সৈন্য নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরো দুই বেসামরিক নাগরিক ও অন্য পাঁচ সিরীয় সেনা আহত হয়েছেন। অবশ্য হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বিবৃতি এখনো দেওয়া হয়নি।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম সিরিয়া। এতে প্রায় ৫৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল তুরস্কেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ। অন্যদিকে সিরিয়ায় প্রাণহানির সংখ্যা ৬ হাজারের বেশি।
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যাপক প্রয়োজনীয় দেখা দেয় এবং আলেপ্পো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি দেশে সাহায্য প্রবাহের জন্য প্রধান চ্যানেল হয়ে ওঠে। আর সেই বিমানবন্দরেই রাতের অন্ধকারে হামলা চালাল ইসরায়েল।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলেছে, বিমানবন্দরের কাছে একটি অস্ত্রের ডিপোকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। একইসঙ্গে আলেপ্পোর গ্রামাঞ্চলে একটি সামরিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি অভিযানের কথাও জানিয়েছে পর্যবেক্ষক সংস্থা। যদিও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ওই হামলার বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।
এর আগে গত মার্চ মাসে ইসরায়েল দুই দফায় আলেপ্পোর বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছেল এবং এর জেরে বিমানবন্দরটি কয়েক দিনের জন্য বন্ধ ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল এই দেশটির অভ্যন্তরে শত শত বিমান হামলা চালিয়েছে। সরকারি নানা স্থাপনার পাশাপাশি মিত্র ইরান-সমর্থিত বাহিনী এবং হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েল অবশ্য খুব কমই সিরিয়ায় এই ধরনের অভিযানের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করে থাকে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার কখনোই প্রকাশ্যে স্বীকার করেনি যে, দেশটির গৃহযুদ্ধে ইরানি বাহিনী তার পক্ষে কাজ করছে। বরং আসাদ সরকার বলেছে, সিরিয়ার মাটিতে শুধুমাত্র তেহরানের সামরিক উপদেষ্টা রয়েছে। এই বিষয়ে বিস্তারিক কোনো তথ্য কোনো পক্ষের কাছেই নেই। তাই এই বিষয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়ে থাকে।
সূত্র: আল-জাজিরা
Posted ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ মে ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin