রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, জাহাজে কিয়েভের ড্রোন হামলা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হামলার ভিডিওতে দেখা যায়, জাহাজটি নভোরোসিয়েস্ক নৌঘাঁটির কাছে টেনে নেওয়া হচ্ছে। কিছুটা কাত হয়ে আছে বলেও মনে হচ্ছে। খবর সিএনএনের।
ইউক্রেনের একটি সূত্র জানায়, ৪৫০ কিলোগ্রাম টিএনটিসহ সামুদ্রিক ওই ড্রোন রুশ জাহাজটিতে হামলা চালায়। প্রায় ১০০ রাশিয়ান সেনাসদস্য জাহাজটিতে ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে।
হামলা হওয়া জাহাজটির নাম ওলেনোগর্স্কি গোর্নিয়া। এটি রুশ নৌবাহিনীর অন্যতম বড় জাহাজ। জাহাজটি ওলেনোগর্স্কি গোর্নিয়াক হিসেবেই চিহ্নিত করেছে রাশিয়ান সামরিক ব্লগাররাও। এটি উভচর অবতরণ জাহাজ বলে দাবি তাদের।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক এ ব্যাপারে বলেন, রুশ নৌবহরের মানমর্যাদা ধ্বংস করা হয়েছে। কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার নৌবহরের উপস্থিতি এবং মস্কোর ব্ল্যাকমেইলের অবসান ঘটানো হবে। ইউক্রেন বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য কৃষ্ণসাগরে স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
রাশিয়ার সিফারার্স ইউনিয়নের বরাত দিয়ে রুশ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তির খবরে বলা হয়, নভোরোসিস্ক বন্দর রাতের হামলার পর এখন স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্গো অপারেশন চলছে।
হামলার ভিডিও প্রকাশ পেলেও আঞ্চলিক গভর্নর ভেনিয়ামিন কনড্রেটিয়েভ দাবি করেন, রাশিয়ান সামরিক বাহিনী নভোরোসিয়েস্কে দুটি সারফেস ড্রোন দিয়ে এই হামলা প্রতিহত করেছে, এতে কোনো হতাহত বা ক্ষতি হয়নি।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও দাবি করে, শুক্রবার সকালে ক্রিমিয়ায় ১০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। একে সন্ত্রাসী হামলা দাবি করে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির দাবি নাকচ করা হয়।
সম্প্রতি রাশিয়ার ভূখণ্ডে ড্রোন হামলা বাড়িয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত রোববার বলেন, যুদ্ধ ধীরে ধীরে ফিরে আসছে রাশিয়ায়।
এদিকে, যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় জেদ্দায় অনুষ্ঠিত বিশ্বনেতাদের সম্মেলেনে অংশ নেবে চীন। দেশটির ইউরেশীয় বিষয়ক বিশেষ দূত লি হুই জেদ্দা সফর করবেন বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কৃষ্ণসাগর শস্য চুক্তিতে ফিরে আসার শর্ত পূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নয়, পদক্ষেপ চায় রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, খাদ্য ও সার রপ্তানিতে বাধা দূর করতে হবে। এসব শর্ত পূরণ না করায় গত ১৭ জুলাই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় মস্কো।
অন্যদিকে, ইউরোপের দেশ লিথুনিয়ায় বসবাস করা রাশিয়া ও বেলারুশের সহস্রাধিক নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটি। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা ও ক্রিমিয়ার অবস্থা প্রসঙ্গে রুশ এবং বেলারুশদের মতামত নেওয়ার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। লিথুয়ানিয়ায় বর্তমানে বেলারুশের ৫৮ হাজার এবং ১৬ হাজার রুশ নাগরিক বসবাস করছেন।