মঙ্গলবার ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে দূরে সরল সৌদি আরব-আমিরাত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

মধ্যপ্রাচ্যের দুই বড় অর্থনীতির দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ব্রিকস গ্রুপে যোগ দিতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি তাদের দীর্ঘদিনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দানকারী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কিছুটা সরে স্বাধীনভাবে কিছু করার সামর্থ্য বাড়াবে। শনিবার হংকংভিত্তিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়।

এতে বলা হয়, ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো পাঁচ উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ নিয়ে গঠিত ব্রিকস তেলসমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশগুলোকে সঙ্গে পেলে তাদের শক্তিতে বৈচিত্র্য আসবে। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পশ্চিমাবিরোধী জোটে যোগ দেওয়ার কোনো ইচ্ছা না থাকলেও ব্রিকসে যোগ দিয়ে রিয়াদ ও আবুধাবি কার্যত ওয়াশিংটন থেকে ‘এক পা দূরে’ সরেছে।

ওয়াশিংটনে আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব থেকে বেরিয়ে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব এবং বৈচিত্র্যে আগ্রহী’। তারা আরও বেশি নিরপেক্ষ বৈশ্বিক ক্ষেত্রের সন্ধান করছে, যেখানে স্বাধীন-সার্বভৌম দেশগুলো নিজেরাই তাদের অংশীদারদের পছন্দ করে নিতে পারবে। তিনি বলেন, ব্রিকসের সদস্য হওয়া মানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক পা দূরে সরে যাওয়া এবং চীনের হাত শক্তিশালী করা।

ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক জনাথন প্যানিকফ বলেন, ব্রিকসে যোগ দেওয়ার জন্য যে ছয় দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, তাদের মধ্যে চারটিই মধ্যপ্রাচ্যের– সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর। এটি ভূরাজনৈতিক হাওয়া পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ, এ দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, সৌদি ও আমিরাতের জন্য ব্রিকসে যোগদান ‘সম্ভবত প্রতীকী’। কারণ, তারা অপশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে জড়িত হওয়া ও সহযোগিতা জোরদারের চেষ্টা করছে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে তাদের অর্থনৈতিক অংশীদার সৃষ্টির মাধ্যমে বৈচিত্র্য আনতে চায়।

অন্যদিকে এ দুই দেশের অন্তর্ভুক্তির কারণে ব্রিকস গ্রুপে নতুন বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সুযোগ বাড়বে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রিকসের সদস্যপদ লাভ মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করবে না। এরই মধ্যে আরব আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি ফোরামের সদস্য হয়েছে। আব্রাহাম অ্যাকর্ড ও আই টু ইউ টু নামে এ দুই ফোরাম যথাক্রমে ২০২০ ও ২০২২ সালে গঠিত হয়। এসব ফোরামের লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করা। আব্রাহাম অ্যাকর্ডের লক্ষ্য ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা।

বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিন দিওয়ান বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সৌদি ও আরব আমিরাত নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করেছে। তবে ‘মজার বিষয়’ হচ্ছে, দুই দেশ আরও বেশি বহুজাতিক ফোরামে যোগ দিচ্ছে। তবে তিনি মনে করেন না যে এটি তাদের বিরুদ্ধে যাবে এবং সাংঘর্ষিক কিছু হবে। প্রত্যেকেরই দৃষ্টি নিজের বিশেষ প্রয়োজন ও লক্ষ্যের দিকে।

ব্রাসেলস স্কুল অব গভর্ন্যান্সের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক গাই বার্টন বলেন, ব্রিকসে মধ্যপ্রাচ্যের নতুন সদস্য সবাই ‘ভিন্ন ভিন্ন ভাবনা ও তল্পিতল্পা’ নিয়ে হাজির হবে। সৌদি ও আমিরাত এটিকে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা হিসেবে দেখবে। ইরান ও মিসর আশা করবে, সদস্যপদ লাভ তাদের ভঙ্গুর অর্থনীতিতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করবে। আবার ইরান এটিকে একটি রাজনৈতিক জোট হিসেবেও দেখবে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:৪৩ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৭ আগস্ট ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(239 বার পঠিত)
(204 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]