নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
সাইকেল বা দ্বিচক্রযান একটি জনপ্রিয় বাহন। যুগ যুগ ধরে মানুষের যাতায়াতের ভরসা সাইকেল। বাংলাদেশের শহর অপেক্ষা গ্রামঞ্চলে এর বেশি ব্যবহার হলেও নগর জীবনের ব্যস্ততায় সম্প্রতিককালে তা কমে এসেছে। পরিবেশবান্ধব এই সাইকেল বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসে। দেশটির কারো কারো তিনটি সাইকেলও রয়েছে। সাইকেল চালালে বায়ুদূষণ হয় না। তাই জ্বালানি চালিত পরিবহণের পরিবর্তে সবাইকে সাইকেল চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন জার্মানির পরিবেশবিদ মাইকেল। সাইকেল চালিয়ে ২২২ দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এ যোগ দিতে দুবাইয়ে এসেছেন তিনি। এ সময় তিনি ৮ হাজার ৮৬২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি এবং মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে তার এমন উদ্যোগ নজর কেড়েছে সম্মেলনে আগতদের।
মাইকেল বলেন, পরিবেশবান্ধব অর্থনীতি গড়া, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি নীতি প্রণয়নসহ পৃথিবী রক্ষার জন্যই তিনি সাইকেল নিয়ে ঘুরে চলেছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫২তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জলবায়ু সম্মেলনে পূর্ব নির্ধারিত ছুটি ঘোষণা করা হয়। তাই এদিন কপে আগত জলবায়ু সম্মেলনের প্রতিনিধিরা ঘুরে বেড়িয়েছেন শহরজুড়ে। তাদের মধ্যে ছিলেন ষাটোর্ধ মাইকেলও। সবুজ পৃথিবীর বার্তা নিয়ে পোশাকও পরেছেন সেই রঙে রঙ মিলিয়ে। সবুজ গেঞ্জি ও সর্ট প্যান্ট পরিহিত মাইকেল দৃষ্টি কেড়েছেন সবার।
বিশ্বের পরিবেশবাদীদের দাবি, কার্বন নিঃসরণ কমাতে হলে কমাতে হবে জ্বালানি চালিত গাড়ির ব্যবহার। মোটরসাইকেলের পরিবর্তে চালাতে হবে বাইসাইকেল। গত কয়েক দিন ধরে জলবায়ু সম্মেলনে ফসিল ফুয়েল অথাৎ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা হয়। গত বুধবার এ নিয়ে ক্লাব অব রোমের ৭৫ জন বিজ্ঞানী কপ নেতৃবৃন্ধের উদ্দেশ্যে এক খোলা চিঠি দিয়েছেন।
খোলা চিঠিতে জাতিসংঘের কপ প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে তারা বলেছেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ এবং বিজ্ঞান একে অপরের পরিপূরক। একটির সঙ্গে অন্যটি জড়িত। এ ব্যাপারে বিজ্ঞান নিয়ে সংশয়ের কোন সুযোগ নেই। প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখতে হলে জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধের বিকল্প নেই।
২০৫০ সালের মধ্যে শুধু শূন্য কার্বন নির্গমন নিশ্চিত করলেই হবে না, ওই সময় পর্যন্ত বিশ্বে যে কার্বন ডাই অক্সাইড বিদ্যমান থাকবে তা শোষন করার জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সাইকেল ব্যবহারের জন্য মাইকেলের উদ্যোগ প্রশংসিত হয় সম্মেলনে।
মাইকেল সাংবাদিকদের বলেন, তেল পুড়িয়ে বাস, ট্রেন চলাচলেে জলবায়ুর ক্ষতি অনেক। সাইকেল পরিবেশবান্ধব। তাই পরিবেশ রক্ষায় সাইকেলের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানিসহ নানা মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণের জন্য পরিবেশ ও জলবায়ুর ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি। এর জন্য প্রধানত দায়ী চীন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো। প্রতিবছর জলবায়ু সম্মেলন হলেও সঠিক কর্মপন্থার অভাবে তেমন সুফল বয়ে আনে না। আর সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ করেন পরিবেশবাদীরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্ল্যাকার্ড হাতে শত শত বিক্ষোভকারী উপস্থিত হয়েছেন দুবাই এক্সপো ২০২০ তে। বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের ৭০ হাজারের বেশি প্রতিনিধিরা জড়ো হয়েছেন এখানে। সবারই একই কথা পৃথিবীকে রক্ষায় কমাতে হবে কার্বন নিঃসরণ। গত ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়া সম্মেলন চলবে আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
Posted ১২:৪৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin