মঙ্গলবার ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যে দ্বীপে কুমিরের খাবার হয়েছিল হাজারো জাপানি সেনা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

নোনা পানির বিশালাকার সব কুমিরের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত মিয়ানমারের রামরি দ্বীপ। রাখাইন রাজ্যের উপকূলে অবস্থিত দ্বীপটির আয়তন প্রায় এক হাজার ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে রামরি দ্বীপে শেষ প্রান্তে আশ্রয় নিয়েছিলেন অন্তত এক হাজার জাপানি সেনা। তারা রামরির প্রায় দশ মাইল জুড়ে বিস্তৃত ঘন ম্যানগ্রোভ বনভূমির জলাশয়ে আশ্রয় নেন। জাপানি সেনারা তখনো জানতো না তাদের জন্য কী ভয়ংকর প্রাণী অপেক্ষা করছে সেখানে।

ম্যানগ্রোভ বনটির শেষ প্রান্তের জলাশয়গুলোতে বাস করত ভয়ংকর সরীসৃপ প্রাণী কুমির। এসব কুমিরের গড় দৈর্ঘ্য ১৭ ফুট, ওজন এক টনের বেশি। এদের ক্ষিপ্ততা, গতি এবং দলবদ্ধ আক্রমণের শিকার হয় হাজারো জাপানি সেনারা। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছিল সেনাদের পক্ষে সম্পূর্ণ অসম্ভব।

বিশ্বের বৃহত্তম সরিসৃপের আস্তানা ওই দ্বীপে অন্তত ৯ শত সেনাকে প্রাণ দিতে হয়েছিল কুমিরের আক্রমণে। তবে মাত্র ২০ জন সেনাকে ব্রিটিশ বাহিনী সেখান থেকে উদ্ধার করতে সামর্থ্য হয়। যারা বেঁচে ফিরেছেন তারা শুনিয়েছেন কয়েক ডজন কুমিরের একত্রে আক্রমণ করার ভয়ংকর গল্প। রাতে কুমিরের আক্রমণ আর গুলির শব্দে কাটত তাদের সময়।

তখন ১৯৪৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের তখনও ব্যাপক দাপট। তাদের পরাহত করতে মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের মৈত্রী জোট। ভারতের উপকণ্ঠে মিয়ানমারের উপকূলে রামরি দ্বীপে নজর পড়েছিল ব্রিটিশদের। সেখানে একটি বিমান ঘাঁটি প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করেছিল তারা। সেই রামরি দ্বীপে ব্রিটিশদের কাজে বাধা দিতে আসে এক দল জাপানি সেনা। শুরু হয় ভয়াবহ যুদ্ধ। পরে পিছু হটতে বাধ্য হয় জাপান। আশ্রয় নেয় দ্বীপটির পেছনের ম্যানগ্রোভ অংশে। আর এতেই তারা জড়িয়ে পড়েন ভয়ঙ্কর সেই মৃত্যুফাঁদে।

সেখানে লুকিয়ে ছিল প্রকৃতির বিভীষিকা। শয়ে শয়ে কুমিরের আস্তানা রামরির ম্যানগ্রোভ বন। বিশেষ ধরনের সেই কুমিরের নাম ‘সল্টওয়াটার ক্রোকোডাইল’ বা নোনা পানির কুমির। মিয়ানমারের নোনা জলের কুমির বিশ্বের সবচেয়ে বড় সরীসৃপ। এরা গড়ে ১৭ ফুট লম্বা। কখনও কখনও দৈর্ঘ্য হতে পারে ২২ ফুটও। ক্ষ্রিপ্ততা, আকার, গতি, শক্তি, তৎপরতা— কোনও ক্ষেত্রেই মানুষ এই কুমিরের সঙ্গে পেরে ওঠে না।

লবণাক্ত কাদামাটিতে কিছু দূর এগিয়ে বিপদের আঁচ পান সেনারা। রাতের অন্ধকারে পানি থেকে মাথা তোলে হাজারো কুমির। এর পর অগণিত কুমির মানুষের গন্ধ পেয়ে হামলা চালাতে শুরু করে।

সূত্র: মিরর ইউকে

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:১২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(239 বার পঠিত)
(204 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]