শনিবার ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৭টি ফ্রন্ট থেকে ইসরায়েলে হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

ইসরায়েল বর্তমানে বহুমুখী যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ ঘিরে বিপজ্জনক আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সামরিক অভিযানের ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে দেওয়া ভাষণে গ্যালান্ত বলেন, ইসরায়েল সাতটি ফ্রন্ট থেকে হামলার শিকার হচ্ছে। এসব ফ্রন্ট হলো গাজা, লেবানন, সিরিয়া, জুডিয়া এবং সামারিয়া (পশ্চিম তীরের ইসরায়েলি নাম), ইরাক, ইয়েমেন এবং ইরান। আমরা এরইমধ্যে ছয়টি ফ্রন্টে পাল্টা হামলা চালিয়েছি এবং ব্যবস্থা নিয়েছি।

বহু বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চলতে থাকা অত্যাচার, গণহত্যা ও ভূমি দখলের প্রতিবাদে গত ৭ অক্টোবর সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায় গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। তাদের এই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনের প্রাণহানি ঘটে। একই দিন আরো ২৪০ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে হামাস। ওই হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে গাজা।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক যুদ্ধ ইতিমধ্যে একুশ শতকের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক সংঘাতে রূপ নিয়েছে। ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডে এখন পর্যন্ত ২১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও আরো ৫০ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বেশিরভাগ এলাকা। জাতিসংঘ বলছে, ফিলিস্তিনি এই ভূখণ্ডের ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় ৮৫ শতাংশই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে পুরো গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী মঙ্গলবার চতুর্থ দিনের মতো উপত্যকায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে বোমা হামলা অব্যাহত রেখেছে। আর এর মাধ্যমে ইসরায়েলি হামলার পরিধি বিস্তারের ইঙ্গিত মিলছে।

গাজার যুদ্ধ ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি অঞ্চলের বাইরে ছড়িয়ে পড়ার নতুন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে গ্যালান্তের মঙ্গলবারের মন্তব্যে। আগের দিন মিসর জানায়, লোহিত সাগরের তীরবর্তী রিসোর্ট শহর দাহাবের কাছে একটি ড্রোনে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করা হয়েছে। গত এক মাসের মধ্যে দেশটিতে দ্বিতীয় ড্রোন হামলার ঘটনা এটি। এই ড্রোনের উৎস তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

তবে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে চলাচলকারী ইসরায়েল ও মার্কিন সব জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করার হুমকি দিয়ে প্রায় প্রত্যেকদিনই হামলা চালাচ্ছে। ইয়েমেনের এই বিদ্রোহীগোষ্ঠী ইসরায়েলেও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

মঙ্গলবারও লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপকূলে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। শনিবার মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ ভারত মহাসাগরে একটি রাসায়নিক ট্যাংকার লক্ষ্য করে ড্রোন হামলার ঘটনায় প্রথমবারের মতো ইরানকে দায়ী করেছে।

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক জেনারেল নিহত হওয়ার একদিন পর মিসরের দাহাবে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলকে এই অপরাধের মাশুল গুণতে হবে।

ইরাকে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী কাতাইব হিজবুল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন তিনটি স্থানে বোমা হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। উত্তর ইরাকের ইরবিল শহরে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে কাতাইব হিজবুল্লাহর হামলায় আমেরিকান তিন সৈন্য আহত হওয়ার পর ওই হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরাকের সরকার।

অন্যদিকে, ইরান-সমর্থিত লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রায় প্রত্যেক দিনই ইসরায়েলের সীমান্তের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে। হিজবুল্লাহর হামলার জবাবে লেবাননের সীমান্ত এলাকায় বিমা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে অন্তত ১৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যাদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহর যোদ্ধা। আর ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর হামলায় নিহত হয়েছেন ১১ জন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:১৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(236 বার পঠিত)
(204 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]