নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
সরকারিভাবে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠানোর সময় সের্গেই তার ছেলেকে না যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সের্গেইকে তার ছেলে স্টাস ওই সময় বলেছিলেন, তিনি যুদ্ধে যাচ্ছেন। তিনি বিশ্বাস করেন এটাই ঠিক।
তবে বাবা তার ছেলেকে বলেন, সে জম্বি এবং দুর্ভাগ্যবশত জীবন তা প্রমাণ করবে।
সের্গেই ও স্টাস প্রকৃত নাম নয়। নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে। সের্গেই তার বাড়িতে সাংবাদিকদের ডেকেছিলেন নিজেদের গল্প শোনাতে।
সের্গেই জানান, ছেলে ইউক্রেনে চলে যাওয়ার পর তার কাছ থেকে বার্তা পেতে শুরু করেন। এক লড়াইয়ের ব্যাপারে ছেলে জানায়, (রুশ) সৈন্যদের কোনো কভার দেওয়া হয়নি। সেখানে কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই; কোনো প্রস্তুতিও নেই। তাদের শুধু এগিয়ে যেতে বলা হয়েছে; অথচ কেউ জানে না যে সামনে কী অপেক্ষা করছে।
সের্গেই বলেন, লড়াই চালাতে অস্বীকার করাটা ছেলের জন্য কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। আমি তাকে বলেছি যে, ‘এটা (লড়াই না করার সিদ্ধান্ত) নেওয়াটাই ভালো। এটা আমাদের যুদ্ধ নয়। এটা স্বাধীনতার যুদ্ধ নয়।’ সে লিখিতভাবে তার অস্বীকৃতি জানাবে বলে জানিয়েছিল।
সের্গেই তার ছেলের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কয়েকজনের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন। তিনি সামরিক কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং তদন্তকারীদের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন।
অবশেষে সের্গেইয়ের প্রচেষ্টা সফল হয়। তার ছেলেকে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। ফিরে এসে বাবাকে স্টাস জানান, বন্দি করার পর তার সঙ্গে কী ঘটেছিল। রুশ সৈন্যদের ‘ভিন্ন একটি দল’ তাকে যুদ্ধে যেতে বাধ্য করার চেষ্টা কিভাবে চালিয়েছিল সেটাও তিনি বাবাকে জানান।
সের্গেই বলেন, তারা (রুশ সৈন্যরা) তাকে মারপিট করেছে এবং তারপর তাকে এমনভাবে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেন স্টাসকে তারা গুলি করতে চলেছে। তারা তাকে মাটিতে শুইয়ে দিয়ে ১০ পর্যন্ত গুনতে বলেছে। স্টাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপর পিস্তল দিয়ে তার মাথায় বারবার আঘাত করা হয়েছে। সে আমাকে বলেছে যে তার মুখমণ্ডল রক্তে মেখে গিয়েছিল।
সের্গেই আরো বলেন, এরপর তারা আমার ছেলেকে একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং বলে, তুমি আমাদের সঙ্গে আসো, না হলে তোমাকে মেরে ফেলব। ওই সময় তাদের একজন বলেছিল যে তারা আমার ছেলেকে স্টোররুমে কাজ করতে নিয়ে যাবে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া যখন ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে, তখন স্টাস কর্মকর্তা পদমর্যাদার ছিলেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শুধু পেশাদার সৈন্যরা তার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ অংশ নেবে।
কিন্তু সেপ্টেম্বরে সব পরিবর্তন হয়ে যায়। পুতিন ঘোষণা করেন যে সশস্ত্র বাহিনীতে কয়েক হাজার রুশ নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তার সৈন্য সমাবেশের ঘোষণায় ব্যাপক বিক্ষোভও শুরু হয়।
রুশ কর্তৃপক্ষ অবশ্য সৈন্যদের ওপর চাপ প্রয়োগ কিংবা আটকের খবরকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
সূত্র : বিবিসি
Posted ১:৩২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin