নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ০৮ মে ২০২৪ | প্রিন্ট
সেবা বাড়ানোর লক্ষে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ঢাকার মধ্যেই আরো চারটি শাখা চালু করেছে। কিন্তু নতুন সার্কেলেও সেবা নিতে যাওয়া গ্রাহকদের জিম্মি থাকতে হয় দালালদের কাছে।
দালাল মারফত ১৩ হাজার টাকা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। কেউ শুধু ফিল্ড টেস্টে পাস করতে চাইলে তাকে গুনতে হয় বাড়তি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। সরকারি হিসাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পেশাদারের জন্য ৩ হাজার ৮০০ আর অপেশাদারের জন্য ৫ হাজার ৫০০ টাকা লাগার কথা।
সর্বশেষ ২০২২ সালে ঢাকার পূর্বাচল এলাকায় বিআরটিএ ঢাকা মেট্রো-৪ সার্কেলের কার্যক্রম শুরু করে। ১৬ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো ভালো যোগাযোগের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি সার্কেল-৪-কে কেন্দ্র করে। কার্যালয়ের সামনে টাকা জমা দেওয়ার জন্য কোনো ব্যাংক নেই। ফলে সেবাপ্রার্থীদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অফিস নতুন হলেও টাকা খাওয়ার পুরনো কৌশলই চলছে। সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে কোনো কাজই সম্ভব নয়।
কার্যালয়টির সামনেই থাকে দালালচক্র। নতুন সার্কেল হওয়ায় অন্য সার্কেলের দালালরাও এ সার্কেল নিয়ন্ত্রণ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স করালে অদক্ষ চালকরা ফেল করলেও পাস।
সম্প্রতি বিআরটিএর পূর্বাচল কার্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাংক না থাকায় টাকা জমা দিতে ভুগতে হচ্ছে সেবাপ্রার্থীদের। তবে প্রকাশ্যেই দালালদের আধিপত্য চলে।
পরীক্ষা দিতে যাওয়া লাইসেন্স-গ্রাহকদের বসার সুব্যবস্থা নেই। তীব্র গরমের মধ্যেও ফিল্ড পরীক্ষা দিতে হয়। ভাড়া করা জায়াগায় চলছে কার্যালয়টি।
সার্কেলটি নতুন হওয়ায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও কম। সপ্তাহে একদিন পরীক্ষা হয়। ফিল্ড পরীক্ষায় ৭০ ভাগের বেশি লোককে ফেল করানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে যারা দালালদের মাধ্যমে কাজ করায় তাদের দিনে ফেল করালেও রাতে ঠিকই পাস।
জানা গেছে, ভবনটির সামনে চায়ের দোকানগুলোতে কয়েকজন দালাল থাকে। তুহিন, আশরাফ, মো. ইমরান প্রমুখের একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে কার্যালয়টি। উত্তরার বাবুল নামে আরেক দালালও এ সার্কেলের কাজ করে দেয়। বাবুলকে দিতে হয় অন্য দালালের চেয়ে কিছু বেশি টাকা।
বসুন্ধরা এলাকার বাসিন্দা আরাব খান গণমাধ্যমকে বলেন, দালাল ছাড়া এখানে পাস করার সুযোগ নেই। আমি পরীক্ষা দিতে এসেছি দালাল মারফত। ১২ হাজার টাকা লাগছে। যারা দালাল ছাড়া আসছে তাদের বেশিরভাগকেই ফেল করানো হচ্ছে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওমর বলেন, বাইক আগে থেকেই ভালো চালাতে পারি। সব পরীক্ষা পাস করলেও ফিল্ড টেস্টে ফেল করিয়ে দিল। আমার ভুল হয়ে গেছে, দালাল ধরিনি। আগামীতে দালাল ধরবো। তাহলেই পাস।
অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ঢাকা মেট্রো-৪ সার্কেলের উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) পারকন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের নিজস্ব জায়গা নেই। ভাড়া করা ভবনে কার্যক্রম চালাতে হয়। যে অভিযোগগুলোর কথা বলছেন সেগুলোর যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই ইন্টার্নাল তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ৪:১৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৮ মে ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin