বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩১ কারাগার বানাচ্ছে মস্কো

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট

৩১ কারাগার বানাচ্ছে মস্কো

ইউক্রেনে হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েই ক্ষান্ত হচ্ছে না রাশিয়া। কোনো অভিযোগ ছাড়াই রাশিয়ার ভূখণ্ড ও দখলকৃত এলাকাগুলোতে বেসামরিক ইউক্রেনীয়দের আটক করছে নির্বিচারে। কেবল ইউক্রেনীয় ভাষায় কথা বলা কিংবা যুবক হওয়াই তাদের অপরাধ। এরই মধ্যে হাজারো নিরপরাধ মানুষকে রুশ সামরিক অভিযানবিরোধী, সন্ত্রাসী কিংবা যোদ্ধা আখ্যা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে বন্দিশালায়।

এসব বন্দির ওপর চালানো হচ্ছে নির্মম নির্যাতন। পরিখা ও গণকবর খনন থেকে শুরু করে যুদ্ধের নানা কাজ করতে তাদের বাধ্য করছে রুশ বাহিনী। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার অভ্যন্তরের কারাগারে এসব বন্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অধিকৃত জাপোরিঝিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নির্মাণ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বন্দিশালা। ২০২৬ সালের মধ্যে এই ধরনের আরও ৩১টি কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা করছে মস্কো। খবর এপির।

ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ার একটি বন্দিশালার শীতকালের দৃশ্য চরম নির্মমতা প্রকাশ করে। সেখানকার বন্দিরা তীব্র ঠান্ডার মধ্যে ভোর হওয়ার আগেই ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান। এর পর তাদের গবাদি পশু পরিবহনের ট্রেলারে করে নিয়ে যাওয়া হয় যুদ্ধের সামনের সারিতে।

সেখানে তাদের দিয়ে প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে পরিখা খনন করানো হয় তীব্র শীতের মধ্যে। বন্দিদের অনেককে আবার রুশ বাহিনীর সামরিক পোশাক পরতে বাধ্য করা হয়। এটি তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে। দিনশেষে তাদের হাত ও নখ শীতে কুঁকড়ে যায়। পার্শ্ববর্তী আরেক স্থানে বন্দিদের দিয়ে গণকবর খোঁড়ানো হয়। সেখানে তীব্র শীতে মৃত্যু হওয়া ইউক্রেনীয় বেসামরিক লোক ও অন্য বন্দিদের গণকবর দেওয়া হয়। কিন্তু এক বন্দি কবর খুঁড়তে রাজি না হওয়ায় তাকে সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করে হত্যা করে রুশ বাহিনী। এর পর সেই গণকবরে তাকেও পুঁতে ফেলা হয়।

এভাবে হাজারো মানুষকে গ্রেপ্তারের কারণে বন্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অধিকৃত ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোতে ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তত ২৫টি নতুন জেল উপনিবেশ ও ছয়টি আটক কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনার রূপরেখা করেছে মস্কো। এ-সংক্রান্ত একটি সরকারি নথি পেয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম এপি।

এসব কারাগারে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, দাসের মতো কাজ করানো, বৈদ্যুতিক শক, মাথার খুলি ও পাঁজরে আঘাত, শ্বাসরোধ করাসহ নানাভাবে নির্যাতন চলে নিয়মিত। কোনোভাবে বেঁচে ফেরা একাধিক বন্দি জানান, তারা মৃত্যু দেখে এসেছেন। গত জুনের শেষের দিকে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বেসামরিক বন্দিদের ৭৭টি মৃত্যুদণ্ড এবং নির্যাতনের কারণে একজনের মৃত্যু নথিভুক্ত করা হয়। অবশ্য, রাশিয়া বেসামরিক নাগরিকদের আটকে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে না।

এদিকে, বিদ্রোহের পর ওয়াগনার গ্রুপ নিয়ে নানা রকম হিসাবনিকাশ শুরু করেছে মস্কো। গ্রুপের মর্যাদা ‘বিবেচনা করা’ দরকার ছিল বলে ক্রেমলিন মন্তব্য করলেও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি, আসলে গ্রুপটির কোনো আইনি ভিত্তিই নেই।

বৃহস্পতিবার রাতে পুতিন কমার্স্যান্ট পত্রিকাকে বলেন, বেসরকারি সামরিক সংস্থার বিষয়ে কোনো আইন নেই। ওয়াগনার গ্রুপের অস্তিত্ব নেই।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্লাস্টার বোমা পেয়েছে ইউক্রেন। গত বৃহস্পতিবার এসব পৌঁছার বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশটি। বিধ্বংসী এসব বোমা এখন পর্যন্ত শতাধিক দেশে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও সীমিতভাবে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে।

ক্লাস্টার বোমাসহ পশ্চিমা ট্যাঙ্ক রুশ বাহিনীর প্রধান লক্ষ্য বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুতিন। শুধু তাই নয়, রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু সতর্ক করেন, এসব ব্যবহার করলে রাশিয়াও একই ধরনের অস্ত্র মোতায়েন করতে পারে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:০৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(221 বার পঠিত)
(201 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]