শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঁচ বিষয়ে একমত যুক্তরাষ্ট্র-চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

পাঁচ বিষয়ে একমত যুক্তরাষ্ট্র-চীন

সামরিক যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের বিষয়ে বৈশ্বিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ঐকমত্যে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বুধবার বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ তথ্য জানান।

বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, মাদক পাচার রোধ, উত্তেজনা নিরসনে আলোচনা অব্যাহত রাখাসহ পাঁচটি বিষয়ে দু’পক্ষের সমঝোতা হয়েছে।

বৈশ্বিক নানা প্রেক্ষাপটে দুই দেশ পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকায় এ বৈঠক নিয়ে খুব কম মানুষই আশাবাদী ছিলেন। তার পরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। বৈঠক শেষে জো বাইডেন বলেন, তারা সরাসরি, মুক্ত ও স্পষ্ট যোগাযোগে ফিরেছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরের বেশি সময় পর দুই নেতা বৈঠকে বসলেন। কিন্তু এখনও তাদের মধ্যে বেশ বিভেদের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। কারণ, বাইডেনের দৃষ্টিতে জিনপিং একজন একনায়ক।

চার ঘণ্টার এই বৈঠকের পর বাইডেন বলেন, এবার তাদের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁর ধারণা, এগুলো খুবই গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ ছিল। কিছু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। এর আগে প্রেসিডেন্ট জিনপিং স্বীকার করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক কখনোই মসৃণ ছিল না। তিনি এটাও বলেন, দুই পরাশক্তির একে অপরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া কোনো অপশন হতে পারে না।

সামরিক যোগাযোগ পুনরায় শুরুর বিষটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশার তালিকায় ওপরের দিকে ছিল। গত বছর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন। এর পরই চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপসহকারী সচিব মিক মুলরয় বলেন, স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সব সময় পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বজায় রেখেছিল, যাতে পারমাণবিক শক্তিগুলোর মধ্যে যুদ্ধের কারণ হতে পারে– এমন যে কোনো দুর্ঘটনা বা ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো যায়। এটি এখন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেও হওয়া দরকার।

বৈঠকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দুই দেশের শীর্ষ নেতারা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আরও পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হন। তবে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে তারা কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি। তারা মিথেন নির্গমন কমিয়ে আনার ব্যাপারে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেছেন। দেশ দুটি ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি তিন গুণ বাড়ানোর বৈশ্বিক প্রচেষ্টার প্রতিও সমর্থন জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে জানান, চলতি মাসের শেষ দিকে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮-এর আগে এটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। যুক্তরাজ্যের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক চ্যাথাম হাউসের ফেলো ও চীন বিশেষজ্ঞ বার্নিস লি বলেন, এটি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ছোট, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের ডেভিড ওয়াসকো মিথেন চুক্তিকে একটি ‘প্রধান পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেন।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ ফেন্টানাইলের জোয়ার ঠেকাতে রাসায়নিক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এটির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে বিশ্বব্যাপী মৃত্যু বাড়ছে। গত বছর প্রায় ৭৫ হাজার মার্কিনির মৃত্যুর কারণ শক্তিশালী কৃত্রিম ওপিওয়েড (আফিমের মতো মাদক)।
দুই নেতার মধ্যে এই বৈঠককে বড় ধরনের কূটনৈতিক অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও আলোচনা চালিয়ে যেতে দু’পক্ষ একমত হয়েছে।
বৈঠকে দু’পক্ষের মধ্যে আরেকটি বিশেষ বিষয়ে সমঝোতা হয়। এটি হলো, চীন যুক্তরাষ্ট্রের চিড়িয়াখানাগুলোর জন্য আরও পান্ডা পাঠাবে। প্রেসিডেন্ট জিনপিং বলেন, পান্ডা বহুকাল ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বন্ধুত্বের দূত।

বৈঠক প্রসঙ্গে সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটির চীনবিষয়ক গবেষক দিমিতার গুয়েরগুইভ বলেন, গত চার মাসে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সত্যিই অসাধারণ উন্নতি হয়েছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৩৬ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(235 বার পঠিত)
(204 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]