শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১২০ ঘণ্টা: উদ্ধার হয়নি টানেলে আটকা ৪০ শ্রমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

১২০ ঘণ্টা: উদ্ধার হয়নি টানেলে আটকা ৪০ শ্রমিক

ভারতের উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় নির্মাণাধীন টানেলে আটকা পড়া ৪০ জন শ্রমিককে ১২০ ঘণ্টা পরেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এখন নতুন যন্ত্র দিয়ে নতুন উদ্যমে উদ্ধারের চেষ্টা শুরু হয়েছে।

এর আগে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে দিল্লি থেকে উত্তরাখণ্ডে উড়িয়ে আনা হয় ‘আমেরিকান অগার’ নামে ২৫ টন ওজনের ঐ খনন-যন্ত্র। সব ক’টি খণ্ড সিল্কিয়ারার বিপর্যয়স্থলে পৌঁছানোর পরে জোড়া শুরু হয়। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও হাইওয়ে প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহের উপস্থিতিতে শুরু হয় ধ্বংসস্তূপ খনন।

সিল্কিয়ারা থেকে বারকোটের মধ্যে নির্মীয়মাণ টানেলের একাংশ ধসে রোববার সকাল থেকে আটকে রয়েছেন ৪০ জন শ্রমিক। পশ্চিমবঙ্গের হুগলির দু’জন ও কোচবিহারের একজন আছেন তাদের মধ্যে। উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কর্নেল দীপক পাটিল।

তিনি বলেন, ‘নিউ অস্ট্রিয়ান টানেলিং মেথড’ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে। এতে সামনে থাকা পাথরের প্রকৃতি বুঝে খননের পদ্ধতি ঠিক করতে করতে এগোনো হয়। প্রথম যে যন্ত্র দিয়ে খনন শুরু হয়েছিল, শক্ত পাথরের সামনে সেটি বিকল হয়ে পড়ে।

খননের সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপের ভেতর দিয়ে লোহার পাইপ জুড়তে জুড়তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঠিক হয়েছে, পাইপের কমবেশি তিন ফুটের গহ্বর দিয়ে আটকে থাকা শ্রমিকেরা কোনো রকমে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন। কেউ যদি হামাগুড়ি দেওয়ার মতো অবস্থায় না থাকেন, তাকে এক রকমের বেল্টের জ্যাকেট পরিয়ে বা স্ট্রেচারে শুইয়ে টেনে বার করার কথা ভাবা হয়েছে।

মন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি, আর দুই থেকে তিন দিনে উদ্ধার অভিযান শেষ করার। বিদেশি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে।

জাতীয় বিপর্যয় উদ্ধার বাহিনী জানিয়েছে, ঘণ্টায় পাঁচ মিটার মতো খুঁড়তে পারে নতুন যন্ত্রটি। খননের চেষ্টা চলাকালীন ছাদ থেকে যে পাথর খসে পড়েছে, তা যোগ করে খুঁড়তে হবে মোট ৭০ মিটারের মতো। সেই হিসেবে সব মিলিয়ে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা লাগার কথা। তবে ছাদের ঢালাই থেকে বেরিয়ে আসা লোহার মতো বাধা পড়তে পারে সামনে। এছাড়া ছাদ থেকে ধসে পাড়তে পারে আরো পাথর। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবরে, এ দিন ১২ মিটার মতো ধ্বংসস্তূপ খনন করা গেছে।

বুধবার রাত ২টো নাগাদ উত্তরকাশী জেলায় ভূমিকম্প টের পাওয়া গেছে। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৩ দশমিক ১। তবে সুড়ঙ্গের ধসে তার কী প্রভাব পড়েছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু জানা যায়নি।

মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরে রাজ্যের সব সুড়ঙ্গ তৈরির প্রকল্প এবার খতিয়ে দেখা হবে।

ধামী বলেন, এ রকম সুড়ঙ্গ আমাদের আরো দরকার ও তৈরিও হচ্ছে। তৈরি যেখানেই হোক না কেন, আমরা সেগুলো খতিয়ে দেখছি।

সুড়ঙ্গে অক্সিজেন পাঠানোর সরু পাইপ দিয়ে আটকে থাকা শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় রসদ পাঠানোর পাশাপাশি ঐ পাইপ দিয়েই তাদের সঙ্গে কথা বলছেন পরিজন ও কর্মকর্তারা। তাদের মনোবল অটুট রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উদ্ধারের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসার দরকার পড়বে। তাদের রক্তে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য ঠিক নাও থাকতে পারে। দীর্ঘক্ষণ মাটির নীচে ঠান্ডায় থাকার ফলে বেরিয়ে আসার পরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে অপ্রস্তুত হয়ে পড়তে পারে তাদের শরীর। সুড়ঙ্গের কাছেই চিকিৎসা কাঠামো তৈরি রাখা হয়েছে। তবে উদ্ধারের পরে আতঙ্কের চোটটাই সব থেকে বড় হয়ে দাঁড়াতে পারে। সূত্র: এনডিটিভি

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(235 বার পঠিত)
(204 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]