নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
মস্কোর কনসার্টে হামলায় অভিযুক্ত চার জনকে গত রবিবার রাশিয়ার একটি আদালতে হাজির করা হয়। নৃশংস এই হামলায় অন্তত ১৩৯ জন নিহত হয়েছে। শুনানির ফুটেজে অভিযুক্ত ফরিদুনি শামসিদ্দিন, দালেরদজন মিরজোয়েভ, সাইদাক্রামি মুরোদালি রাচাবালিদোজা এবং মুহাম্মদ সোবির ফায়জভকে গুরুতর আহতাবস্থায় দেখা গেছে। কাউকে কাউকে আদালত কক্ষে নুয়ে ঢুকতেও দেখা যায়।
রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী নিজেই তাদের নৃশংস জিজ্ঞাসাবাদ সেশনের ভিডিও ফাঁস করে। অভিযুক্তদের একজন ২৫ বছর বয়সী শামসিদ্দিনের মুখ মারাত্মকভাবে ফোলা দেখাচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে এই হামলায় আরো দুজনকে নিয়োজিত করার অভিযোগ রয়েছে, যাদের সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাজিকিস্তানে শামসিদ্দিনের পরিবার যেখানে বাস করে তা রাজধানী দুশানবে থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে লয়োব নামের একটি গ্রাম। গত শনিবার তাজিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ওই এলাকায় দেখা যায়। তারা শামসিদ্দিনের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন, লয়োবের আরো ডজনখানেক লোকের সঙ্গে ছয় মাস আগে শামসিদ্দিন প্রথম রাশিয়াতে পাড়ি জমায়। তাজিকের স্বল্প মজুরি এবং অতি মাত্রার বেকারত্ব থেকে পালাতেই অন্য অনেকের মতো অভিবাসী হওয়ার পদক্ষেপ নেন তিনি।
তাজিক কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছর ৬ লাখ ৫২ হাজারেরও বেশি মানুষ রাশিয়ায় অভিবাসন করেছে। তবে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে এই সংখ্যা দশ লাখও হতে পারে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছে, তিন মাস পর শামসিদ্দিন রাশিয়া থেকে তুরস্কে যায় এবং মার্চের শুরুতে রাশিয়ায় ফিরে আসে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির কাছে ‘সন্ত্রাসী হামলা’র কথা শুনে বিশ্বাসই করছিলেন না গ্রামবাসীরা। শামসিদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের ফুটেজ অনলাইনে দেখার পর একজন গ্রামবাসী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে এত নির্যাতন করেছে যে তিনি লেনিনের মৃত্যুর দায় নিতেও প্রস্তুত।
তাজিকিস্তানের প্রায় প্রতিটি পরিবার থেকে এক বা একাধিক সদস্য কাজের জন্য রাশিয়ায় পাড়ি দিয়েছে। মধ্য এশিয়ার ক্ষুদ্র ও দরিদ্র এই দেশের অর্থনীতির জন্য তাজিক অভিবাসীদের পাঠানো অর্থ গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে।
৪০ বছর বয়সী নির্মাণ শ্রমিক আইরাজ আশুরোভ, তার দুই ভাই এবং ছেলেদের নিয়ে প্রায়শই কাজের জন্য রাশিয়ায় যাতায়াত করেন। তিনি সম্প্রতি পরিবারকে দেখতে তাজিকিস্তানে ফিরেছেন কিন্তু শুক্রবারের হামলার আলোকে তিনি রাশিয়ায় ফিরে যাওয়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমন এই হামলাকে ‘লজ্জাজনক এবং ভয়ঙ্কর ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি দেশের জনগণকে উগ্রবাদী গোষ্ঠীর প্রভাব থেকে শিশু ও যুবকদের রক্ষা করতে আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ‘তাজিক জাতির সুনাম ভূলুণ্ঠিত না করার’ও আহ্বান জানান।- বিবিসি।
Posted ৪:২৯ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin