রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পশ্চিমবঙ্গজুড়ে এক দিনে বজ্রপাতে অন্তত ১৭ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝড়বৃষ্টি চলাকালীন বজ্রপাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বর্ধমান জেলায় চারজন, মুর্শিদাবাদে তিনজন, পশ্চিম মেদিনীপুরে তিনজন, হাওড়ায় তিনজন, উত্তর ২৪ পরগনায় দু’জন এবং ঝাড়গ্রামে একজন ও পুরুলিয়া জেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিন স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে ৪টা নাগাদ প্রবল বজ্রসহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয় পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে। মাত্র ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিপাতে এসময় বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন দু’জন। মৃতরা হলেন কাটোয়া থানার কোয়ারা গ্রামের বাসিন্দা দীপক পাল (৫৮), ভাতারের বেলেন্ডা গ্রামের মনসুর আলি শেখ (৩৫), কালনা থানার কালিনগর গ্রামের খোকন শেখ (৪০) ও খণ্ডঘোষ থানার তোরকোনা গ্রামের বাসুদেব রায় (৫২)।

মুর্শিদাবাদ জেলায় বৃহস্পতিবার বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত আর‍ও তিনজন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন সালাউদ্দিন শেখ (২১), হাবিব শেখ (২৫) ও নেকবস শেখ (২৬)। আহতরা সামসেরগঞ্জের অনুপনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাজুড়েও মাত্র আধা ঘণ্টার এই ঝড় বৃষ্টিতেই বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তিনজনের। মৃতরা হলেন তাপস পাতর (২৮), স্বপন ভূঁইয়া (৪৪) ও বৈদ্যনাথ সরেন (৫৫)। আহত হয়ে চিকিৎসাধীন চারজন। বজ্রবৃষ্টি ছাড়াও মেদিনীপুর শহরে প্রবল শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।

হাওড়া জেলার আমতা ও বাগনানে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই ঘটনা ঘটে। আহতরা আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। মৃতরা হলেন আমতা শেরপুরের বাসিন্দা মহানন্দ ঘুকু (৫৩), মিল্কিচক ধুনরি পাড়ার বাসিন্দা মোহা. ইসমাইল (৩৭) এবং বাগনানের বাকসি দেউলগ্রাম ছিলাম পাড়ার বাসিন্দা জুলফিকার হোসেন (২২)।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরার সালতিয়া এলাকায় মাঠে কাজ করতে গিয়ে বজ্রাঘাতে দুই যুবকের মৃত্যু হয়। মৃত দুই যুবক হলেন মিলন বিশ্বাস (২৭) ও ধীরাজ পাল (২১)। সালতিয়া এলাকায় গরুর জন্য মাঠ থেকে বিচলি কিনে তা এক জায়গায় জড়ো করছিলেন। তখনই বজ্রাঘাতে দুজনের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়।

ঝাড়গ্রাম জেলা মাঠে কৃষিকাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতে মাঠেই লুটিয়ে পড়েন এক মাঝ বয়সী নারী। তাকে উদ্ধার করে মানিকপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

কয়েক মাস ধরেই প্রায় বৃষ্টিহীন ছিল রাজ্যটির দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো। কার্যত তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস অবস্থা হয়ে উঠেছিল দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে। তাপমাত্রা কোথাও কোথাও পৌঁছে গিয়েছিল ৪৩ থেকে ৪৪ ডিগ্রি। প্রবল গরমের কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়ই বজ্রসহ কালবৈশাখীর ঝড় নেমে আসে।প্রবল ঝড়ে জেলার একাধিক জায়গায় বাড়ির চালও উড়ে যায়। বেশ কয়েকটি বাড়ির পাঁচিল ভেঙে পড়েছে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হওয়ায় চাষেরও কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রচণ্ড দাবদাহের মাঝেই এই ঝড় বৃষ্টি জেলাবাসীকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে।

তবে শুক্রবার বৃষ্টি সম্ভাবনা খানিকটা কম। শনিবার থেকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি শুরু হবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। রোববার ঝড়-বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। রোববার ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রপাতের আশঙ্কাও রয়েছে। সোমবার বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা সব জেলায়ই।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:২২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(223 বার পঠিত)
(201 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]