নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
বর্তমানে দেশের সব জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগ। এটি এখন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এর আগে প্রধানত ঢাকা শহরেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যেত।
আবার এতদিন আমরা জানতাম, পরিষ্কার জমাটবদ্ধ পানিতে এডিস মশা জন্ম নেয়। কিন্তু এডিস মশার এই স্বভাবে পরিবর্তন এসেছে। এখন নোংরা পানিতেও জন্ম নিচ্ছে ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বহনকারী এডিস মশা। আবার দিনের আলো নিভে গেলে যে এডিসের উপদ্রব কমে যেত, সেই এডিস মশা এখন রাতেও কামড়াচ্ছে।
এডিস মশার এই স্বভাব পরিবর্তনের কারণ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আগে বলতাম, ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা শুধুমাত্র দিনেই কামড়ায়। কিন্তু আমরা গবেষণা করে দেখেছি, এডিস মশা শুধুমাত্র দিনেই কামড়ায় না, রাতেও কামড়ায়।
তিনি বলেন, এর পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। কারণগুলো বিশ্লেষণ করে দেখেছি- বিশ্বব্যাপী আলোর দূষণ হচ্ছে, আলোর ব্যবহার বেড়েছে। রাতে এখন প্রচুর আলো ব্যবহার হয়। আলোর ব্যবহার ও আলোর দূষণের কারণে মশার চরিত্র পরিবর্তন হয়েছে। এখন দিনে বা রাতে- সবসময়ই এডিস মশা কামড়ায়।
এই কীটতত্ত্ববিদ বলেন, আরেকটা বিষয় হলো- আমরা একসময় বলতাম যে পরিষ্কার পানিতে এডিস মশা হয়। আসলে এই ব্যাপারটিও সত্যি না। পরিষ্কার পানিতেই শুধুমাত্র এডিস মশা হয় এমন না, যেকোনো পানিতেই এডিস মশা হয়। আমরা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করেছি, আমরা দেখেছি যে সুয়ারেজের পানি, ড্রেনের পানি এমনকি নোনা পানিতেও এডিস মশা তার জীবনচক্র সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারে। এডিস মশা যেকোনো পরিবেশে খাপ খাইয়ে টিকে থাকতে পারে।
ডেঙ্গু এমন ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে কেন- এই প্রশ্নের উত্তরে কবিরুল বাশার বলেন, যখন কোনো একটি ভাইরাসবাহিত রোগ অনেকদিন ধরে কোনো একটি জায়গায় থাকে এবং সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করে যদি ‘শূন্য’ করা না যায়, তখন আবার এটা বাড়তে থাকে। যেহেতু এডিস মশা বাড়ছে এবং ডেঙ্গু রোগীও আমাদের পরিবেশে আছে, এ কারণে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ছড়িয়ে পড়ার অনেকগুলো কারণ আছে। এছাড়া প্রতিটি জেলাতেই এডিস মশা পাচ্ছি। কোরবানি ঈদের কারণে অনেক মানুষ ঢাকা বিভিন্ন জেলায় গিয়েছে। অনেকে ডেঙ্গু নিয়ে বা এডিস মশা কামড় খেয়ে এই স্থান পরিবর্তন করেছে। ফলে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।
Posted ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin