নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াতে ইসলামী। শনিবার গুলশানের ইইউ দূতাবাসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে জামায়াত জানায়, আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হলে পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানো হবে।
বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানো হবে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো পাতানো নির্বাচন হলে পর্যবেক্ষক পাঠিয়ে ইইউ সম্মানিত বোধ করবে কিনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে বৈঠকে।
বিএনপির সুরে জামায়াতও বৈঠকে বলেছে, নির্দলীয় সরকার কীভাবে গঠিত হবে তা নিয়ে আলোচনা হলে সংলাপ হতে পারে। নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না জায়ামাত।
গত দুই সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠায়নি ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আসন্ন নির্বাচনে পাঠাবে কিনা সিদ্ধান্ত নিতে ইউরোপের ২৭ দেশের জোট প্রাক প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। বাংলাদেশে আসা এ প্রতিনিধি দল সাংবিধানিক, সরকারি সংস্থা, নাগরিক সমাজের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠক করছে। শনিবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করে।
২০১৪ সালে ইইউ পার্লামেন্ট সহিংসতার কারণে জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। ১০ বছর পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফেরা দলটির সঙ্গে এবার ইইউ বৈঠক করল। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডা. তাহের বলেছেন, জামায়াত সহিংসতা করে না।
বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কীভাবে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জামায়াত সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নজিরবিহীন প্রতারণার নির্বাচন হয়েছে। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
সংলাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৮ সালেও সংলাপ হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ওয়াদা করেছিলেন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কিন্ত আগের রাতে ভোট হয়েছে।
নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় নিজ নামে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না জামায়াত। নিবন্ধন প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা এ প্রশ্নে ডা. তাহের বলেছেন, জামায়াতের নেতাকর্মীদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, এক লাখ ১০ হাজার নেতাকর্মীকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, একই কায়দায় নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানানো হয়েছে। ন্যায়বিচার হলে জামায়াত আপিল বিভাগে নিবন্ধন ফিরে পাবে।
গত ১০ জুন এক দশক পর ঢাকায় সমাবেশ করে প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরেছে জামায়াত। সরকারের সঙ্গে সমঝোতার গুঞ্জন নাকচ করে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ডা. তাহের বলেছেন, আপসের প্রশ্নই আসে না। আপস হলে জামায়াত সিলেটে সমাবেশ করার অনুমতি পেত। আজ সিলেটে জামায়াতকে সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করতে দেয়নি পুলিশ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শুক্রবার সিলেটে সমাবেশ করতে চেয়ে আবার অনুমতি চেয়েছে জামায়াত। ২২ জুলাই চট্টগ্রামে সমাবেশ করতে অনুমতি চাইবে।
সরকারের সঙ্গে সমঝোতা না হলে বিএনপির এক দফার যুগপৎ আন্দোলনে কেন নেই জামায়াত- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে শামিল হওয়ার পর জামায়াত আমির গ্রেপ্তার হন, জামায়াতের মিছিলে হামলা হয়। আশা করেছিলাম, বিএনপি অন্তত বিবৃতি দেবে। তা না করায় জামায়াতের নেতাকর্মীরা আহত (মনোকষ্ট) হয়েছেন। এক দফা নিয়ে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করলেও জামায়াতের সঙ্গে কথা বলেনি বিএনপি। তাই জামায়াত নিজের মতো করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে।
বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাছুম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ ও আবদুর রব।
Posted ৪:৪২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin