মঙ্গলবার ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নামাজ পড়তে গিয়ে সংঘর্ষে প্রাণ যায় রেজাউলের

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ থেকে ফেরার পথে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত রেজাউল করিম (২০) কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি যাত্রাবাড়ী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদরাসায় দাওরা বিভাগে পড়তেন। ডেঙ্গু পজিটিভ হওয়ায় অসুস্থ ছিলেন, তাই ডাক্তারের বিশ্রামের পরামর্শে ছুটি নিয়ে খিলগাঁওয়ে বোনের দেবরের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। পথে বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। এরপরই গুরুতর আহত হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে রেজাউলের লাশ নিতে এসে স্বজনরা এসব কথা বলেন।

রেজাউলের বোনজামাই জুয়েল মিয়া  বলেন, ‘রেজাউল কখনই রাজনীতি করেনি। বাড়িতে হেফজ শেষ করে যাত্রাবাড়ীর কওমী মাদ্রাসাটিতে গত ২ বছর ধরে দাওরা শ্রেণিতে পড়ত। অসুস্থ থাকায় খিলগাঁও তার বেয়াইয়ের বাসায় যাওয়ার সময় বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ পড়তে নামে। এরপরই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তার মৃত্যু হয়।’ তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়ে ওই এলাকায় ছিল সে। টুপি পাঞ্জাবী দেখে হয়ত মনে করেছে জামায়াতের লোক।

জুয়েল মিয়া আরও বলেন, রেজাউলের বাড়ি শেরপুরের নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামে। বাবা আব্দুল ছাত্তার কৃষক ও মা রেনুজা বেগম বাড়ি সামলান। দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে সে ছিল চতুর্থ। বোনেরা সবাই তার বড়। তার ছোট ভাই নুর মোহাম্মদ এলাকায় মাদরাসায় পড়ে।

এ ঘটনায় শনিবার রেজাউলের বড়বোন ফারহানা আফরিন সুমি বাদি হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আমার ছোট ভাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার রাতে খিলগাঁও তার বোনের দেবরের বাসায় যায়। কিছুটা সুস্থ হলে নিষেধ সত্ত্বেও একদিন পরে মাদ্রাসায় চলে যায় এবং ছুটি নিয়ে শুক্রবারে আসবে বলে জানায়। শুক্রবারে বোনের দেবরের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে গুলিস্তানে নামে। সন্ধ্যায় মারামারি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আমার ভাইয়ের বাম পায়ের হাটুর ওপরে-পিছনে কেটে গুরুতর জখম হয় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এরপর ঢামেকে নিয়ে এলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

নিহত রেজাউলের বোনের দেবর মো. রাসেল মিয়া বলেন, গত বুধবার গ্রামের বাড়ি থেকে রেজাউল রাজধানীর খিলগাঁও গোড়ানে তার বাসায় আসে। এ সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু পজিটিভ পাওয়া যায়। তিনি বলেন, আমি নিষেধ করি তবুও মাদরাসা থেকে ছুটি নিয়ে আসতে যায় রেজাউল। পরে আমরা এই দুঃসংবাদ শুনি। নিহত রেজাউলের খালাতো ভাই আব্দুল আলীম বলেন, গত ২ বছর যাবত ঢাকায় পড়ার জন্য আসেন রেজাউল। কোনও রাজনৈতিক দল করতেন না তিনি। কোনও দলের সমর্থনও করতেন না।

পল্টন থানার ওসি সালাহউদ্দীন মিয়া  বলেন, গুলিস্তানে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মাদ্রাসাছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় শনিবার একটি মামলা হয়েছে। নিহতের বোন ফারহানা আফরিন সুমি বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন। হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে তারা কাজ করছেন।

শুক্রবার শান্তি সমাবেশ শেষে ফেরার সময় ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য কামরুল ইসলাম এবং কেরানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সমর্থকরা মারামারিতে জড়ায়। এ ঘটনার সময় গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যুবরণ করেন রেজাউল করিম।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:১২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]