মঙ্গলবার ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ছে জলবায়ু উদ্বাস্তু ক্ষতিপূরণ চায় ঢাকা

এএইচএম মাহবুবুল হাসান পিংকু   |   বৃহস্পতিবার, ০৩ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

বাড়ছে জলবায়ু উদ্বাস্তু ক্ষতিপূরণ চায় ঢাকা

দেশে জলবায়ু উদ্বাস্তু মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, কেবল গত বছরই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৭১ লাখের বেশি বাংলাদেশি। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা এক কোটি ৩৩ লাখে পৌঁছতে পারে। এ ছাড়া আগামী ৩০ বছরে বাংলাদেশে জলবায়ু উদ্বাস্তুর সংখ্যা ৭ গুণ বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ‘অ্যাকশন এইড’ এবং ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক সাউথ এশিয়া’। প্রতিষ্ঠান দুটি এক যৌথ জরিপ শেষে জানিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ ও ভয়াবহ প্রভাবে ২০৫০ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে বাস্তুভিটা ছেড়ে দিতে হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে আগামী ২৭ বছরে ২৩ হাজার কোটি ডলার ব্যয়ের একটি পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। অভিযোজন পরিকল্পনা বা ন্যাশনাল অ্যাডপটেশন প্ল্যান (এনএপি) নামের এই পরিকল্পনা চলতি বছর থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত চলবে। বেসরকারি জলবায়ু পরিবর্তন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসকে (সিইজিআইএস) এই পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্ব দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়।

সিইজিআইএর হিসাব বলছেÑ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রতিবছর বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ হারে ক্ষতি হচ্ছে। গত বছর দেশের জিডিপির আকার ছিল ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার বা ৪৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। সেই হিসাবে প্রতিবছর ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৬৫ কোটি ডলার। কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে বছরে ক্ষতির এই পরিমাণ ২০৩০ সাল নাগাদ জিডিপির ২ শতাংশ এবং ২০৫০ সালে জিডিপির ৯ শতাংশে পৌঁছতে পারে। তেমন ঘটলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে বছরে ৮৫০ কোটি ডলার ব্যয় করতে হবে। আর ২০২৩-৫০ সাল পর্যন্ত ২৭ বছরে ২৩০ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার কোটি ডলার প্রয়োজন পড়বে। বড় আকারে ছয়টি জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু এজেন্ডার মাধ্যমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশে এখন প্রতিবছর চার লাখ মানুষ গ্রাম ছেড়ে স্থায়ীভাবে শহরে চলে আসছে। এ সংখ্যা প্রতিদিন দুই হাজারের মতো। তাদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ জলবায়ু উদ্বাস্তু। সংস্থাটির হিসাবে ২০৫০ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ১ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ বাসস্থান হারাবে।

দেশে জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা সংরক্ষণে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় বিশ্ব জলবায়ু তহবিল ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে বাড়তি অর্থায়ন প্রয়োজন। এই অর্থ বৈশি^ক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোকে দিতে হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা রেসপন্সিবল নই। রেসপন্সিবল হলোÑ উন্নত দেশগুলো। কারণ শতকরা ৭০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে কয়েকটি উন্নত দেশ। আমরা বলেছি, আমাদের অর্থনীতির শতকরা দুই ভাগ গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে নষ্ট হচ্ছে। তারা যেন আমাদের ক্ষতিপূরণের জন্য অর্থ প্রদান করে।

জলবায়ু সম্মেলন থেকে গঠিত ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিল সক্রিয় হবে বলে আশা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা কয়েকটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি, একটা হলোÑ ‘মুজিব প্রোসপারিটি প্লান’; এটা আমাদের একুশ থেকে একচল্লিশ বছরের। আরেকটি হলোÑ ‘ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্রোগ্রাম’, যেটা সাতাশ বছরের; ২০২৩-৫০ সাল পর্যন্ত। এবার আমাদের খরচ ধরা হয়েছে দুইশ ত্রিশ বিলিয়ন ডলার। আমরা এই টাকাটা চাই। আমরা রিজিওনাল অ্যাডাপটেশন সেন্টার করেছি। আমরা অনেক সুন্দর অ্যাডাপটেশন ম্যাকানিজম তৈরি করেছি; কিন্তু আমাদের ক্ষতি হচ্ছে, তাই এই টাকাটা আমরা চাই।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:০৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৩ আগস্ট ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]