বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’ বাপেক্স কেন ধুঁকছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ২০ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’ বাপেক্স কেন ধুঁকছে?

দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় দেশে বাড়ছে জ্বালানির চাহিদা। এই চাহিদা মেটাতে দেশের মাটির নিচে থাকা জ্বালানি সম্পদকে কাজে লাগানোর বদলে বৃদ্ধি পেয়েছে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে জ্বালানি আমদানির প্রবণতা।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর অব্যাহত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে দেশে জ্বালানির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের জ্বালানির প্রয়োজন মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড বা বাপেক্স। কারণ দেশের ভূগর্ভে থাকা গ্যাস সম্পদ অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও সামর্থ্য রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

বাপেক্সকে শক্তিশালী করলে আরও জোরদার হবে দেশের গ্যাস সম্পদ উত্তোলনের প্রচেষ্টা। এখন পর্যন্ত বাপেক্সই সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্যাসক্ষেত্রে আবিষ্কার করলেও সরকারি এই সংস্থার বদলে উত্তোলনের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে। যেখানে কূপ খনন করতে বাপেক্সের থেকে অনেক বেশি অর্থ নিয়ে যাচ্ছে বিদেশি কোম্পানিগুলো।

বাপেক্সের সাফল্য

১৯৮৯ সালে পেট্রোবাংলার অনুসন্ধান পরিদপ্তর বিলুপ্ত করে প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। প্রথমে শুধু অনুসন্ধান কোম্পানি হিসেবে কাজ শুরু করলেও ২০০২ সাল থেকে অনুসন্ধান ও উৎপাদন কোম্পানিতে পরিণত হয় বাপেক্স।

এ পর্যন্ত ১৮টি অনুসন্ধান কূপ খনন করে ১০টি নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে বাপেক্স। সাতটি ক্ষেত্র থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। বৈশ্বিকভাবে যেখানে একটি কূপে গ্যাস পেতে সাধারণত কমপক্ষে পাঁচটি অনুসন্ধান কূপ খনন করতে হয়, সেখানে বাপেক্স প্রতিটি কূপ থেকে গ্যাস তুলতে গড়ে দুটিরও কম অনুসন্ধান কূপ খনন করেছে। যা বিশ্বের যে কোনো জ্বালানি অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠানের জন্য ঈর্ষণীয়। গত এক বছরে বাপেক্সের আবিষ্কৃত গ্যাসের মূল্য ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আমদানিকৃত এলএনজির সঙ্গে তুলনা করলে এই অংক গিয়ে দাঁড়াবে অর্ধলক্ষাধিক কোটি টাকায়। গত চার বছরে বাপেক্স ছয়টি কূপ খনন করে পাঁচটিতে গ্যাস পেয়েছে। এর মধ্যে চারটি থেকে পুরোদমে গ্যাস উত্তোলন করা যাবে।

সিলেটের জকিগঞ্জে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে বাপেক্স। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে সংস্থার খরচ হয় ৭৮ কোটি টাকা। সেখানে মজুত রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার গ্যাস। চলতি বছরের মে মাসে ভোলায় দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে প্রতিষ্ঠানটি। গত নয় মাসে ভোলায় মোট তিনটি কূপে গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাপেক্স। খুব সামান্য বিনিয়োগেই এমন সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বাপেক্স। এ ছাড়া সম্প্রতি তিতাস গ্যাসক্ষেত্রের একটি পরিত্যক্ত কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদনে সফলতা দেখিয়েছে তারা। গত ৯ জুন গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় এই কূপ থেকে।

বাপেক্স কি অবহেলার শিকার?

যেখানে বিদেশি কোম্পানিগুলোর তুলনায় দেশের মাটিতে জ্বালানি অনুসন্ধানে বাপেক্সের ঈর্ষণীয় সাফল্য, সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে তেমন নজর দেয়া হয়নি। গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় রিগ ও জনবল বাড়ানো হচ্ছে না। জ্বালানি অনুসন্ধান ও উত্তোলনের মতো ব্যয়বহুল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে যে পরিমাণ অর্থায়ন প্রয়োজন, তাও নেই বাপেক্সে। বরং বাপেক্সের বদলে বিদেশি কোম্পানি দিয়ে গ্যাস অনুসন্ধানের ঝোঁক বাড়ছে।

কেন বিনিয়োগ পাচ্ছে না বাপেক্স?

প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের অভাবে ধুঁকছে বাপেক্স। গ্রাহকদের টাকায় তৈরি গ্যাস উন্নয়ন তহবিল (জিডিএফ) থেকে গ্যাস অনুসন্ধানে বরাদ্দ শুরু হয় ২০১২ সালে। সেখান থেকে ঋণ পেলেও কোন প্রকল্পে সরকারি অর্থায়ন পায়নি বাপেক্স। জিডিএফ থেকে পাওয়া অর্থ গ্যাস অনুসন্ধানে ব্যবহার করেছে তারা। তবে বাপেক্সের সামর্থ্য বাড়ানোর কাজে তেমন কোন প্রকল্প নেয়া হয়নি।

বাপেক্স শক্তিশালী হওয়ার পথে বাধা কোথায়?

একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার পথে বাপেক্সের সামনে অর্থনৈতিক বাধার পাশাপাশি রয়েছে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতাও। বাপেক্সের নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সীমিত। প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পেট্রোবাংলার মাধ্যমে জ্বালানি বিভাগের অনুমোদন নিতে হয়। অনেক সময় অনুসন্ধান কূপে গ্যাস পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে পুরো টাকাটাই গচ্ছা যায়। অনেক সময় কূপ খননে বিনিয়োগের অর্থ ফেরত আসবে না-এই ভয়ে সরকারের কাছে অর্থ চাইতে আত্মবিশ্বাসের অভাব বোধ করেন বাপেক্স কর্মকর্তারা। অথচ জ্বালানি অনুসন্ধানে এটাই বিশ্বের স্বীকৃত পন্থা। কূপ অনুসন্ধান ব্যর্থ হলেও তাকে ব্যর্থতা বলা যায় না। কারণ এই কূপ খননের অভিজ্ঞতাই কাজে লাগে পরবর্তী কূপ খননের ক্ষেত্রে। তেল গ্যাস অনুসন্ধানে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকেই, সেই ঝুঁকি সামনে রেখেই চালাতে হয় অনুসন্ধান। আর একটি কূপে অনুসন্ধান সফল হলেই সেখানে পাওয়া গ্যাসের মূল্য থেকে ব্যর্থ অনুসন্ধানে ব্যয় হওয়া খরচের বহুগুণ উঠে আসে।

যুগের সাথে তাল মেলাতে বাপেক্সের কারিগরি সক্ষমতা বাড়াতে হবে

বাপেক্সের কূপ খননের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশেরও অভাব রয়েছে। অভাব রয়েছে জনবলেরও। প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ না দেয়ার কারণে দক্ষ ও অভিজ্ঞ লোকবল কমে যাচ্ছে। নিয়মিত নিয়োগ না থাকায় কেউ অবসরে গেলে দক্ষতার ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

তেল গ্যাস অনুসন্ধানের সক্ষমতা নির্ভর করে খননযন্ত্রের ওপর। একটি উন্নত প্রযুক্তির খনন যন্ত্রের দাম ৪০০ কোটি টাকার মতো। তবে একবার কিনলে তা অন্তত ২০ বছর ব্যবহার করা যায়। এই খননযন্ত্রের স্বল্পতায় ভুগছে বাপেক্স। ১০ বছর আগে সর্বশেষ খনন যন্ত্র কেনা হয় বাপেক্সের। অথচ মাত্র দুটি কূপ খননে বিদেশি জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলো যে পরিমাণ অর্থ আদায় করে তা দিয়েই একটি খনন যন্ত্র কেনা সম্ভব।

 

এ ছাড়া বাপেক্সের বর্তমান সামর্থ্যকেও কতটা কাজে লাগানো হচ্ছে, তা নিয়েও আছে প্রশ্ন। দেশে একটি কূপ খননে বাপেক্সের খরচ হয় ৮০ কোটি টাকা। অথচ বিদেশি কোম্পানি একটি কূপ খননে নেয় এর দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ।

এ ছাড়া পেট্রোবাংলা ২০২৪ সালের সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। অথচ বাপেক্স তার বর্তমান লোকবল ও রসদ সামর্থ্য নিয়ে বছরে দুই থেকে তিনটি অনুসন্ধান কূপ খনন করতে পারে। যদি পেট্রোবাংলার এই পরিকল্পনা অনুযায়ী কূপ খনন করতে হয় তাহলে বাপেক্সকে শক্তিশালী করে তার কূপ খননের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। কিনতে হবে নতুন রিগ।

কেন মেধাবী কর্মীদের ধরে রাখতে পারছে না বাপেক্স?

মেধাবী কর্মকর্তা ও টেকনিশিয়ানদের ধরে রাখতে পারছে না বাপেক্স। বুয়েটসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মেধাবী শিক্ষার্থীরা এখানে কর্মজীবন শুরু করলেও তাদের ধরে রাখার মতো সুযোগ সুবিধা নেই এখানে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তেল ও গ্যাস কোম্পানিতে রয়েছে এই খাতে অভিজ্ঞ কর্মীদের জন্য অনেক বেশি বেতনে কাজে অবারিত সুযোগ। তাই অনেক ক্ষেত্রেই প্রণোদনার অভাবে বাপেক্স ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দেন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা এবং টেকনিশিয়ানরা। অথচ বাপেক্সের অনুরূপ প্রতিষ্ঠান ভারতের অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশন লিমিটেডেরর বেতন কাঠামো দেশটির গড় জাতীয় বেতন স্কেলের দ্বিগুণ। বেতন ভাতা ও সুবিধা কম হওয়ার কারণে মেধাবী ও অভিজ্ঞ কর্মীদের অনেকেই শেষ পর্যন্ত বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানিতে উচ্চ বেতনে চাকরি নিয়ে চলে যান।

সোনার ডিম পাড়া হাঁস বাপেক্স

গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের চলমান অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ২০২১ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর বাংলাদেশের চাহিদা পূরণে গ্যাস আমদানিতে ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ প্রয়োজন হবে। এর খুব সামান্য অংশ দিয়ে বাপেক্সকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে যদি প্রতিষ্ঠানটিকে গ্যাস অনুসন্ধানের কাজে লাগানো যায়, তবে প্রতি বছর সাশ্রয় হবে বিপুল পরিমাণ অর্থ। উদাহরণ হিসেবে, ২০২২ সালে ৯টি কূপে অনুসন্ধান চালাতে বাপেক্সের ব্যয় হয়েছিল মাত্র ৮১২ কোটি টাকা। কিন্তু এই অনুসন্ধানের মাধ্যমে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তাতে এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে দেশের অন্তত ১ লাখ কোটি টাকার সাশ্রয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এক্ষেত্রে বাপেক্সকে বলা যেতে পারে, সোনার ডিম পাড়া হাঁস।

 

বাপেক্স প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

এ ব্যাপারে বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৗশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. ম তামিম সময় সংবাদকে বলেন, ‘বাপেক্সের লোকবল ও ঝুঁকি নেয়ার ক্ষমতা- এগুলো বিবেচনা করলে দেখা যায় বর্তমানে দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের যে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে সেই চাহিদা বাপেক্স বর্তমান কাঠামোয় মেটাতে পারবে না। বর্তমান কাঠামো বা মডেলে বাপেক্সকে শক্তিশালী করা সম্ভব নয়। তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি, তাদের প্রয়োজনীয় তহবিল যোগানো হয়নি। একে যদি বড় আকারে আনতে হয়, তবে সম্পূর্ণ নতুনভাবে গঠন করতে হবে। সক্ষমতা বাড়াতে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। আর শুধু দেশে অনুসন্ধানে আটকে থাকলে হবে না, বিদেশে অনুসন্ধানের ঝুঁকি নিতে হবে।’

বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম সময় সংবাদকে বলেন,
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ যাদের গ্যাসের মতো জ্বালানি সম্পদ আছে সেখানে অবশ্যই বাপেক্সের মতো জাতীয় একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। শুধু থাকার জন্যই নয়, একে শক্তিশালী করার জন্য যেসব সুযোগ সুবিধা দেয়া প্রয়োজন তার সবই সরকারের দেয়া উচিত। বাপেক্সের সফলতাও আছে, ব্যর্থতাও আছে। বাংলাদেশে বাপেক্স যে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে এবং সেখানে যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা তো অত্যন্ত উচ্চ মানের সফলতা।

এ প্রসঙ্গে ইলিশাসহ ভোলায় বাপেক্সের সফল গ্যাস অনুসন্ধানের কথা উল্লেখ করেন এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘বাপেক্সের এই সক্ষমতাকে আরও বাড়াতে হবে। সফলভাবে ড্রিলিং করতে যে ধরনের কাঠামো প্রয়োজন, যে কারিগরি সক্ষমতা প্রয়োজন তার ঘাটতি আছে বাপেক্সের। বিদেশি কোম্পানির তুলনায় বাপেক্সের একটি কূপ খননে অনেক বেশি সময় লাগে। কারণ তার কাঠামো, তার যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামে ঘাটতি রয়েছে। যদি বাপেক্সকে ঠিকভাবে সজ্জিত করা যায়, তবে বাপেক্স অবশ্যই বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে পারবে।’

মেধাবী কর্মী ধরে রাখতে না পারাকে বাপেক্সের বড় দুর্বলতা উল্লেখ করে ড. বদরূল ইমাম বলেন,
একজন মেধাবী শিক্ষার্থী যখন বিশ্ববিদ্যালয় শেষে বাপেক্সে ঢোকেন তখন তার বেতন ভাতা হয় সমমানের বিদেশি কোম্পানির কর্মীর তুলনায় অনেক কম। ফলে চাকরিতে হতাশার সম্মুখীন হন তারা। এ পরিস্থিতিতে এক পর্যায়ে বেশি বেতন ভাতা পেয়ে বিদেশি কোম্পানিগুলোতে চলে যায়। বাপেক্সের এ মেধা ধরে রাখার জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করা, সুযোগ সুবিধা বাড়ানো-এগুলোর দায়িত্ব সরকারের।

আশাবাদী বাপেক্স এমডি

অবশ্য দেশের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে বাপেক্সের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে সময় সংবাদকে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শোয়েব।

তিনি বলেন, ‘ভোলায় আরও পাঁচটি কূপ খননের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলে গ্যাসপ্রাপ্তির সম্ভাবনা খুবই ভালো থাকায় ইতোমধ্যেই কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান, কক্সবাজারে তিন হাজার লাইন কিলোমিটারের সাইসমিক সার্ভের ডাটা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, ভোলা ও কুমিল্লায় নিজস্ব সক্ষমতায় মোট ২৩৫২ লাইন কিলোমিটার এলাকায় টু ডি সাইসমিক সার্ভে করছে বাপেক্স। এ ছাড়া গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি জেলার আরও এলাকায় সাইসমিক জরিপের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর এসব উদ্যোগের পেছনে অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে ভোলায় গ্যাস প্রাপ্তি। এই এলাকাগুলোকে পুরোমাত্রায় জরিপের আওতায় আনা হচ্ছে।। এ ছাড়া সুবর্ণচর, চরফ্যাশনে থ্রি ডি সাইসমিক জরিপ করা হচ্ছে ১৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে।

মেধাবীদের ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাপেক্সের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন,
রিগ অপারেট করার মতো যে ধরনের লোক দরকার তা বাপেক্স পায়। কিন্তু বিদেশে রিগ অপারেট করার লোকের চাহিদা অনেক বেশি। সেখানে তারা বেশি বেতন পায়।

তবে এ পরিস্থিতিতে উত্তরণে বাপেক্সের তরফে নতুন বেতন কাঠামোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। বাপেক্সের কারিগরি সক্ষমতা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে খুব শিগগিরই বাপেক্সের জন্য একটি রিগ কেনার কথাও জানালেন মো. শোয়েব।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৩:৪৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২০ আগস্ট ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]