শনিবার ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাড়ি ফিরল সেই বৃদ্ধ দম্পতি: ফিরে পাবেন সম্পত্তিও

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

বাড়ি ফিরল সেই বৃদ্ধ দম্পতি: ফিরে পাবেন সম্পত্তিও

নেত্রকোণার দুর্গাপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসানের প্রচেষ্টায় বাড়ি ফিরেছেন চুরির অপবাদে বাড়িছাড়া সেই বৃদ্ধ বাবা-মা। শনিবার বৃদ্ধ দম্পতি সুরেশ চন্দ্র দাস ও বৃদ্ধ বেলি রাণী দাস নিজ বাড়ি ফিরে যান। ছেলেরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছে বৃদ্ধ বাবা-মার কাছে। সেই সঙ্গে ভরণ-পোষণের দায়িত্বও নিয়েছেন তারা। এমনকি ফিরে পাবেন সম্পত্তিও।

গত ৩ সেপ্টেম্বর ডেইলি বাংলাদেশে দুর্গাপুর পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধুপাড়ার বৃদ্ধ দম্পতি সুরেশ চন্দ্র দাস ও বেলি রাণী দাসের মানবেতর জীবনযাপন নিয়ে ‘সম্পত্তি লিখে বাবা-মাকে বাড়ি ছাড়া করল ৩ ছেলে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসনের।

শনিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৃদ্ধ এই দম্পতি খবর নিতে ছুটে যান সোমেশ্বরীর পাড়ে। প্লাস্টিক বস্তায় মোড়ানো সেই ঝুপড়ি ঘর পরিদর্শন শেষে ছেলেদের ডেকে এনে বাবার নামে থাকা সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়া বাবা-মা জীবিত থাকা পর্যন্ত ভরণ-পোষণ বাবদ প্রত্যেক ছেলে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়াসহ অনতিবিলম্বে বৃদ্ধ বাবা-মার থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশও দেন ইউএনও।

জানা যায়, চার ছেলে সন্তান নিয়েই চলছিল বৃদ্ধ সুরেশ ও বেলি রাণী দম্পতির সংসার। বাবা-মায়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে কৌশলে শেষ সম্বল ২০ শতক জায়গার মধ্যে ১৮ শতক জায়গা নিজের নামে লিখে নেন তিন ছেলে শ্যামল, সাগর ও সজল। সবার বড় ছেলে পরিমল বাবার মতোই সহজ সরল হওয়ায় তাকে দেয়নি কিছুই।

সন্তানরা আগে যেমন খোঁজ খবর নিতেন কিন্ত সম্পত্তি লিখে নেয়ার পর তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকি না খাইয়ে রাখতেন বৃদ্ধ বাবা-মাকে। পেটের ক্ষুধায় দুইজনেই ভিক্ষাবৃত্তি করে খাবার জুগিয়েছেন। এরপর একদিন টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে ছেলের বউ ঘর থেকে বের করে দেন। এইসব কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে সোমেশ্বরী নদীর পাড়ে পুরাতন প্লাস্টিকের বস্তা আর টিনের তৈরি ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু হয় তাদের।

অভিযুক্ত ছেলেরা জানান, তাদের নামে লিখে নেয়া সবটুকু জায়গা ফিরিয়ে দিবেন। এছাড়াও বাবা-মাকে দেখাশোনাও করবেন পাশাপাশি তাদের বসবাসের জন্য ঘর নির্মাণ করে দিবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, সংবাদটি দেখার পরপরই আমি নিজেই বৃদ্ধ এই দম্পতি খোঁজ খবর নিতে ছুটে আসি এবং ছোট ঝুপড়ি ঘরটিও পরিদর্শন করি। এমন একটি ঘরে বসবাস করা খুবই কষ্টের। তাদের আবারো নিজ বাড়িতে ফেরাতে স্থানীয়দের সহায়তায় ছেলেদের সঙ্গে কথা বলি। পরে ছেলেরা সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়াসহ প্রত্যেক ছেলে তাদের বাবা-মায়ের ভরণ-পোষণের জন্য প্রতি মাসে এক হাজার টাকা ও থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৪:২৬ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]