নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে সম্প্রীতি বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বানসহ চারটি দাবি সংগঠনটির নেতারা ইসিতে উত্থাপন করেন।
সংগঠনটির দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ধর্মভিত্তিক প্রচারণা এবং তার ফলে সৃষ্ট পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক প্ররোচনা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তি যাতে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং শান্তিপ্রিয় নির্বাচনমুখী সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল সমূহ চিহ্নিত করে নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচনোত্তর সহিংসতা রোধে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বৈঠক শেষে সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযুষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন এলেই সংখ্যালঘু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করেন, তাদের কপালে ভাঁজ পড়ে। আমরা এটা আর দেখতে চাই না। ইসিকে বলেছি, শক্তভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সম্প্রীতি বাংলাদেশের মতো অরাজনৈতিক সংগঠনগুলো সহায়তা করবে। ইসি সহমত পোষণ করেছে।
পীযুষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘২০০১ সালের মতো ব্ল্যাক অক্টোবর আর বাংলাদেশে দেখতে চাই না। যে ভয়াবহতা, নৃসংসতা, অত্যাচার প্রায় ৭১ সালকে মনে করিয়ে দেয়, সে জিনিসগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চাই। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে, তাদেরকে সরকারে এবং কোনো আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় দেখতে চাই না।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পীযুষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা ঘরপোড়া গরুর মতো, অতীতের ভয় থেকে এসেছি। সাবধানের কোনো মার নেই।’
ইসিকে সহযোগিতা করার বিষয়ে এই প্রবীণ অভিনেতা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো কাজ যদি তারা করেন, আমরা আমাদের ভলেন্টিয়ার সহযোগিতা দেবো। ২০০১ সালে আমরা সারা দেশ ঘুরে নির্যাতন, পাশবিকতার চিহ্ন দেখেছি, বর্বরতার চিহ্ন দেখেছি। সেটা যেন আর না হয়।’
পীযুষ বন্দোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আমরা চাই, এদেশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী নির্বাচনমুখী হোক এবং এবারের ভোটারদের মধ্যে তরুণরা বেশি। তাদের আমরা নির্বাচনমুখী করতে বলেছি। এজন্য কেবল ইসি নয়, দলগুলোরও একটা ভূমিকা আছে। সামাজিক সংগঠন, মিডিয়ার ভূমিকাও ফেলে দেওয়া যায় না। ভোটের উৎসব যদি তরুণদের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে পারি, তবে অচিরেই আমরা একটি খোলসমুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া পাব।’
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, ‘ভয় করছি যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তাদের নিয়ে। যদি বিএনপির ভেতরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী থেকে থাকে, আমরা দেখেছি যাদের প্রগতিশীল মনে করেছি, তাদের ওখানেই নির্যাতন বেশি হয়েছে। তাই যদি আশঙ্কা করে থাকি, সেটা সমীচীন।’
ইসির সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রীতি বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। আর ইসির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনাররা এবং ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রীতি বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন- সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, যুগ্ম আহ্বায়ক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী শিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. উত্তম বড়ুয়া, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত একেএম আতিকুর রহমান, ড. অসীম সরকার, জয়শ্রী ব্যানার্জী, হেলাল উদ্দীন, সাইফ আহম্মেদ, তাপস হালদার, রাজিব কর।
Posted ২:৫৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin