শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল পাস

কোনো ব্যক্তি বা পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। এই বিধান রেখে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল, ২০২৩’ পাস করা হয়েছে।

বুধবার জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপিত হলে কণ্ঠভোটে পাস হয়।

অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনাকারী ফাইন্যান্স কোম্পানির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, লাইসেন্স প্রদান, ব্যবস্থাপনা, নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা, আর্থিক কাঠামো সুসংগঠিতকরণ এবং সময়ের চাহিদা পূরণকল্পে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ রহিতক্রমে যুগোপযোগী করে পুনঃপ্রণয়নকল্পে আনীত বিলটি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক আজ জাতীয় সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন।

এর আগে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বিলটির ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন।

বিলে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি বা তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হলে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হতে পারবে না।

এই আইন কার্যকর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত শেয়ার থাকলে তা হস্তান্তর করতে হবে। এটি না করলে অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।

তবে এসব বিধান সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে দুই জনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবে না। শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ারের অধিকারী হলে ঐ পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দুইজন পরিচালক থাকতে পারবেন। আর শতকরা ২ থেকে ৫ ভাগ শেয়ারের অধিকারী হলে ঐ পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন।

বিলে আরো বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রদত্ত বা প্রদেয় মোট ঋণ সুবিধার আসলের পরিমাণ ঐ ফাইন্যান্স কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত মূলধন ও রিজার্ভের, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক, সময় সময়, এতদুদ্দেশ্যে নির্ধারিত হারের বেশি হবে না। তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত হারের সীমা কোনো অবস্থাতেই শতকরা ৩০ ভাগের বেশি হবে না। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি এর কোম্পানির শেয়ার জামানত রেখে কোনো ব্যক্তিকে ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বেনামি বা অস্তিত্বহীন বা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে কোনো প্রকার ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা প্রদান করবে না। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনো ব্যক্তিকে ১০ লাখ টাকা অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত পরিমাণের বেশি ঋণ প্রদান করবে না। কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বিনা জামানতে এর কোনো পরিচালক বা পরিচালকের পরিবারের সদস্য ঋণ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা মঞ্জুর করবে না। এসব শর্ত লঙ্ঘন করে কোনো পরিচালক বা কর্মকর্তা উণ সুবিধা প্রদান করলে এটি অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং এ ধরনের অপরাধের জন্য ঐ ব্যক্তি অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা প্রাক্তন পরিচালক ও তার পরিবার বা অন্য কোনো ব্যাংক-কোম্পানি বা ফাইন্যান্স কোম্পানির বর্তমান বা প্রাক্তন পরিচালক ও তার পরিবারের গৃহীত ঋণের ওপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করলে অথবা ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণগ্রহীতা হিসাবে চিহ্নিত কোনো ব্যক্তির ওপর আরোপিত বা অনারোপিত সুদ বা মুনাফা মওকুফ করলে এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো ব্যক্তি লাইসেন্স ছাড়া অর্থায়ন ব্যবসা পরিচালনা করছে বা কোনো সময় করেছিল বা এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এটি তদন্ত করতে পারবে। তবে লাইসেন্সবিহীন অর্থায়ন ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তি তদন্তকাজে অসহযোগিতা করলে ব্যক্তি অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব বই, হিসাব প্রতিবেদন, কোনো বিবরণী, ব্যবসা সংক্রান্ত কাগজ বা অন্যান্য দলিলে মিথ্যা কিছু সংযোজন করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক ৩ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলটি পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের সদস্য মুজিবুল হক, কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, পীর ফজলুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, রওশন আরা মান্নান এবং স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:৩৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]