নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
হাঁস-মুরগির পালক অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে- এটা অনেকের কাছে অবাক লাগতে পারে। পালক সাধারণত বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হয়। তবে সেই পালক ফেলে না দিয়ে সংগ্রহ করা হচ্ছে নওগাঁয়। আর ব্যবসায়ীদের হাত ধরে বছরে প্রায় দেড় কোটি টাকার পালক চলে যাচ্ছে রাজশাহী ও ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা।
জেলার রাণীনগর উপজেলার বালুভরা গ্রামের ব্যবসায়ী ছিলেন মজিবর রহমান। তিনি হাঁস-মুরগির ব্যবসা করতেন। ভারতেও হাঁস-মুরগি সরবরাহ করতেন। ১৯৪৭ সালে নাহিদ ফেদার এন্ট্রারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। এরপর পাকিস্তান এবং চীনে হাঁসের পালক রফতানি করেন ১৯৮২ সাল পর্যন্ত।
এসব পালক থেকে ফেদার, কোট, লেপ এবং তোশক তৈরি হয়। পরবর্তীতে ঢাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছে পালক বিক্রি শুরু করেন। মজিবর রহমানের অবর্তমানে সেই ব্যবসার হাল ধরেন তার ছেলে আব্দুস সালাম। রাণীনগর বাজারে তার পালক এবং স্টেশনারি দোকান রয়েছে।
১৯৯০-৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি নিজেই জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও চায়নাতে হাঁসের পালক রফতানি করেন। ১৯৯৫ সালে সারাদেশের মতো জেলাজুড়ে ভয়াবহ বন্যা হলে রফতানির জন্য রাখা পালকগুলো নষ্ট হয়ে যায়। এতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয় আব্দুস সালামের। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়লে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বাড়তে থাকে দূরত্ব। এরপর আর রফতানি করেননি তিনি।
এরপর ঢাকার এক ব্যবসায়ীর কাছে পালক বিক্রি শুরু করেন আব্দুস সালাম। তবে ২০১৯ সালে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে তা আবারো বন্ধ হয়ে যায়। এতে হতাশ হয়ে পড়লেও হাল ছাড়েননি তিনি। রাজশাহীতে চায়না ব্যবসায়ীরা পালক কেনা শুরু করলে তাদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেন। তার দোকানে পাঁচজন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। খারাপ-ভালো পালক ও আবর্জনা বাছাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তারা। এ পালক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় অন্তত পাঁচ হাজার হকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। তারা গ্রামে গ্রামে ঘুরে পালক সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন পালক সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীদের কাছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। দিনে তারা ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন।
Posted ৮:১৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin