নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
পাবনা সদর উপজেলার দোগাছিতে বন্ধুর ভুল ইনজেকশনে হাসমত আলী শেখ নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বাল্যবন্ধু স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আতিকুজ্জামান ওরফে সুমন পরপর চারটি ইনজেকশন পুশ করতেই হাসমত মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ। এর আগে, সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসমত দোগাছি ইউনিয়নের দোগাছি মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত আবুল মজিদ প্রামাণিকের ছেলে। তিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী ছিলেন। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক আতিকুজ্জামান ওরফে সুমন মহুরি দোগাছি চিথুলিয়া গ্রামের আব্দুল জব্বার শেখের ছেলে।
জানা গেছে, গত ৩ দিন ধরে বুকে জ্বালাপোড়া ও যন্ত্রণায় ভুগছিলেন হাসমত। সোমবার রাতে দুইটা গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ার পরেও বুকে ব্যাথা ও যন্ত্রণা ঠিক হয় না। মঙ্গলবার সকালে বুকের ব্যাথা ও যন্ত্রণা বেশি হলে ওই পল্লী চিকিৎসক আতিকুজ্জামান সুমনকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তিনি সেখানে গিয়ে হাশেমের শরীরে পরপর চারটি ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশ করার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হাসমত। এদিকে মৃত্যুর পরপরই অভিযুক্ত চিকিৎসকের ফার্মেসি ভাঙচুর করে ও ওষুধ পুড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা।
নিহতের চাচা ইসরাইল বলেন, পল্লী চিকিৎসক সুমন ইনজেকশন পুশ করার সঙ্গে সঙ্গে মারা যান হাসমত।
নিহতের স্ত্রীর ঈশিতা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী ছোটখাটো অসুস্থ হলে সুমন ডাক্তারের থেকে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকে। গত ৩ দিন ধরে বুকে ব্যাথা ও যন্ত্রণায় ভুগছিল। সোমবার রাতে তার কাছ থেকে গ্যাসের ট্যাবলেট নিয়ে খায়। সকালে অসুস্থ বেশি হলে ওই ডাক্তারকে আমার স্বামী ফোন করে ডাকেন। স্বামীকে বারবার বলি যে পাবনায় যেতে হবে। সে এ কথা না শুনে ওই ডাক্তারকেই ডাকে। এরপর সে আমার বাড়িতে এসে পরপর চারটি ইনজেকশন পুশ করেন। এক মিনিটের মধ্যেই স্বামী আমার হাতের ওপর মারা যায়। এই ঘটনায় তিনি সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
পল্লী চিকিৎসক আতিকুজ্জামান ওরফে সুমন মুহুরি বলেন, হাসমত আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা সব সময় একসঙ্গে চলাচল করেছি। সকালে তার বুকে ব্যাথা বেশি হলে আমি গিয়ে প্রথমে হাসপাতালে নেয়ার কথা বলেছি। এরপর একটা সার্জেল গ্যাসের ইনজেকশন পুশ করি। হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। আসলে তার মৃত্যুর জন্য আমি দায়ি নই। অযথা আমার ফার্মেসির দোকান ভাঙচুর করে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ওষুধ পুড়িয়ে দিয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত সঠিক তথ্য জানা যাবে। রিপোর্টে যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, এ বিষয়ে এখনো আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। পল্লী চিকিৎসকদের কোনো অনুমতি থাকে না। সেজন্য ওই ভাবে রেজিস্ট্রারও থাকে না। যদি কোনো ক্লিনিক বা হাসপাতাল হতো তাহলে রেজিস্ট্রার থাকত। তখন আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তদন্ত করতে পারতাম। যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে খতিয়ে দেখা হবে।
পাবনা সদর থানার ওসি রওশন আলী বলেন, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।
Posted ৭:১৮ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin