বুধবার ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দিনেই কোটি টাকার পান বিক্রি হয় যে হাটে

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট

দিনেই কোটি টাকার পান বিক্রি হয় যে হাটে

প্রতি সোমবার ও শুক্রবার ভোর ৬টা থেকে জমজমাট হয়ে উঠে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার কুচিয়ামোড়া পানবাজার হাট। এই হাটে দিনে বিক্রি হয় কোটি টাকার পান। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে এ পান এখন রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।

জানা যায়, ভেড়ামারার উৎপাদিত পান কৃষকদের কাছ থেকে কিনে এনে এ পান কুচিয়ামোড়া বাজারে নিয়ে আসেন পাইকাররা। আবার অনেক চাষি নিজেও বিক্রি করার জন্য পান বাজারে নিয়ে আসেন। আর এখান থেকে পান বিক্রির জন্য সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলা নিয়ে যান খুচরা বিক্রেতারা। পান বিক্রি হয় বিড়া হিসেবে। এক বিড়াতে পানের সংখ্যা থাকে ৮০ থেকে ২০০টি। আকারভেদে পানের পাইকারি দাম ৪০ থেকে ১৩০ টাকা।

বিক্রেতারা জানান, কুচিয়ামোড়া প্রতি পান হাটবাজারে ১ কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়। ক্রেতারা পান নিয়ে চলে যান দেশের নানা প্রান্তে।

বাহাদুরপুর মাধপপুর গ্রামের পানচাষি সাফাত আলী বলেন, এ এলাকায় কবে থেকে এ আবাদ শুরু হয়েছে জানি না। তবে দাদার আমল থেকে দেখে আসছি। নিজেও করেছি আমার এখন চারটা পান বরজ। মাটি, বাঁশ ও কাশিয়াসহ (ছাউনির উপকরণ) (এক ধরনের তার) সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। কাজের লোকও পাওয়া যায় না।

তিনি আরো বলেন, পান চাষ করে মেয়ে দুইটিকে লেখাপড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছি। এখন আমি খুব সুখি মানুষ।

কুচিয়ামোড়া গ্রামের জমেলা বেগম বলেন, কয়েক বছর আগে স্বামী মারা গেছে। পান বিক্রি করেই দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। বড় ছেলে অনার্স ও ছোট ছেলে এবার এসএসসি দিয়েছে। বসতবাড়িসহ মোট জমি ৪০ শতাংশ। এরই মধ্যে ১৭ শতাংশে পান লাগিয়েছি। সপ্তাহে এক গাদি করে পান তোলা যায়। বিক্রি হয় ৪-৫ হাজার টাকা। তবে বর্ষাকালে আরো বেশি পান তোলা যায়। পান বিক্রির অর্থ দিয়েই আমার সংসারসহ সব খরচ চলছে।

আরেক পানচাষি আমির হোসেন বলেন, পানের বরজ থেকে সারা বছরই পান সংগ্রহ করা যায়। তবে শীতকালে তুলনামূলক কম পান উৎপাদন হয়। কারণ শীতকালে পান পাতা বাড়ে কম। এসময় উৎপাদন কম হলেও বাজারে দাম থাকে বেশি। পানচাষ টিকিয়ে রাখতে টিএসপি সারের দাম কমানোসহ পর্যাপ্ত সরবরাহের দাবি জানান তিনি।

পাইকারি ক্রেতা হাসান বলেন, চাষিদের থেকে পান কিনে আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাই। এখানের এক বাজারে ১ কোটি টাকার পান বিক্রি হয়। আমাদের চাষিরা পান চাষ করে লাভবান হচ্ছে। পানের উৎপাদন আরো বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা নজর দিচ্ছি।

ভেড়ামারা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ডাক্তার আমিরুল ইসলাম মান্নান বলেন, পানচাষ করেই ভেড়ামারার মানুষ অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছে। এখানকার পান স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে জেলার বাইরেও যাচ্ছে। পানের আবাদ ধরে রাখলেই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না ভেড়ামারাবাসীকে।

ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ সুলতানা বলেন, দিন দিন এ উপজেলায় পানচাষ বাড়ছে। অন্যান্য ফসল আবাদের তুলনায় পানচাষ লাভজনক।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]