নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
এসএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম মিয়া। তবে আর পাঁচজন পরীক্ষার্থীর মতো নন তিনি। জন্মের পর থেকে দুই হাত নেই তার। ছোটবেলা থেকে পা দিয়ে লিখে নিজের পড়াশোনা এগিয়ে নিয়েছেন। তবে অভাবের সংসারে চতুর্থ শ্রেণিতে থাকতে একবার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবু দমে যাননি সিয়াম। অদম্য ইচ্ছাশক্তির ফলে আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। দুই হাত ছাড়াই পা দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন সিয়াম। এদিকে, সিয়ামের পড়ালেখার দায়িত্ব নিয়েছেন ওসি মুসফিকুর রহমান।
সিয়াম জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর জিন্নাহ মিয়ার ছেলে। সরিষাবাড়ীর চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক শাখা থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তিনি। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সিয়াম সবার ছোট। বড় বোন ও ভাই স্নাতক পাস করেছেন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ভাই চাকরিপ্রত্যাশী।
সিয়ামের এ বিষয়টি নজরে পড়ে সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুশফিকুর রহমানের। গত শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধী সিয়াম মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার বাবা জিন্নাহ মিয়া ও মা জোসনা বেগমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি। এসময় তিনি সিয়ামের পড়াশোনার খরচের সর্বাত্মক সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।
ওসির এ মানবিকতার প্রতিশ্রুতি পেয়ে খুশিতে চাপা কান্নায় ভেঙে পড়েন সিয়ামের বাবা-মা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সরিষাবাড়ী থানার এসআই মাহমুদুল হাসানসহ সিয়ামের পরিবারের সদস্যরা।
সিয়ামের বাবা জিন্নাহ মিয়া বলেন, ছোটকাল থেকেই তার পড়ালেখার প্রতি খুবই আগ্রহ ছিল। অভাবের কারণে সিয়ামের পড়ালেখা বন্ধ করতে বললেও সে দমে যাননি। অন্য সকল শিশু-কিশোরের মতোই নিয়মিত স্কুলে যাবার প্রবল ইচ্ছায় আজ এ পর্যন্ত পৌঁছেছে সে।
ওসি মুসফিকুর রহমান বলেন, ইচ্ছা থাকলেই যে উপায় হয়, সিয়াম তার জ্বলন্ত উদাহরণ। সিয়ামের মতো কিশোরের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করতে পারলে সমাজের অবহেলিত প্রতিবন্ধীরা একটু হলেও প্রশান্তি অনুভব করবে। শুধু সিয়ামই নয়, আমাদের সমাজে বিত্তবানদের উচিত প্রতিটি প্রতিবন্ধীর পাশে দাঁড়ানো। যাতে করে কিছুটা হলেও তারা ভরসা পায়। তাদের অদম্য ইচ্ছাগুলো কিছুটা হলেও পূরণ করতে পারে।
Posted ৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin