নিজস্ব প্রতিবেদক | বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
অর্ডার কমে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়তি পরিচালন খরচের মধ্যেই মাত্র ৮দিনে দেশের ৪৪ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন এবং ঈদ বোনাস দেয়া নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন গার্মেন্টস মালিকরা। ১ থেকে ৫ এপ্রিল ঈদের বোনাস এবং ৬ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এ অবস্থায় আর্থিক সংকট নিরসনে সরকারের কাছে স্বল্পমেয়াদী ঋণের পাশাপাশি গুজব ঠেকানোর আহ্বান তাদের।
বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু বড় বাজারে অর্ডার কমেছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হলেও মার্চ মাসের ২০ দিনে হয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। বিদেশি অর্ডার কমলেও গার্মেন্টস সেক্টরের পরিচালন খরচ যেমন বেড়ে চলেছে, তেমনি এপ্রিল মাসের শুরুতেই বেতনের পাশাপাশি শ্রমিকদের দিতে হবে ঈদ বোনাস।
বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে দেশের পোশাক খাত। আগের মতো পণ্যের অর্ডার নেই। তবে বেড়ে গেছে উৎপাদন ও শ্রমিক খরচ। পাশাপাশি মিলছে না কাঙ্ক্ষিত অর্থও।
বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, ১ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে ঈদের বোনাস এবং ৬ থেকে ৮ এপ্রিলের মধ্যে মার্চ মাসের পুরো বেতন পরিশোধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ৯ এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকবে দেশের সব গার্মেন্টস কারখানা। গত ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে শ্রমিকদের নতুন বেতন কাঠামো।
এ পরিস্থিতিতে মাত্র ৮ দিনের মধ্যে বিশাল অংকের বেতন এবং বোনাস দিতে গিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে গার্মেন্টস মালিকদের। বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, এবার মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস একসঙ্গে পরিশোধ করতে হবে। এতে চ্যালেঞ্জের মুখে গার্মেন্টস মালিকরা। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের পক্ষ থেকে সহজ শর্তে লোন দেয়া প্রয়োজন।
নতুন বেতন কাঠানো প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন নিয়ে গুজবের উপর ভর করে গত নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে গার্মেন্টস সেক্টরে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল শ্রমিকদের একটি অংশ। দেশে-বিদেশে প্রভাব পড়া এই তাণ্ডবের রেশ এখনো কাটেনি। চলতি ঈদ মৌসুমেও বেতন এবং বোনাস নিয়ে গুজব ছড়িয়ে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে শঙ্কা গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের।
বিজিএমইএ সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, বেতন এবং বোনাস নিয়ে গুজব ছড়িয়ে যেন দেশে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে না পারে সে বিষয়ে সরকারকে নজর রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, দেশের আটটি ইপিজেডের ৬০০ গার্মেন্টস কারখানার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জে স্বতন্ত্র গার্মেন্টস রয়েছে ২ হাজার ১০০টি। আর চট্টগ্রামে কারখানা রয়েছে ৪৬৪টি। ঢাকায় ৩৩ লাখ এবং চট্টগ্রামে ১১ লাখ শ্রমিক সরাসরি গার্মেন্টস কারখানায় কাজ করছে।
Posted ৪:৩১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৭ মার্চ ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin