নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
নওগাঁর মান্দা উপজেলার গোয়ালমান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বকুল হোসেন আকন্দের বিরুদ্ধে তিন শিক্ষার্থীকে লাঠি দিয়ে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি ও বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক। ঘটনার পর মারপিটের ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ৬ এপ্রিল বেলা ১০টার দিকে গোয়ালমান্দা স্লুইচ গেটে বুলবুল হোসেনের দোকানের সামনে এ মারপিটের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় ভুক্তভোগী দাশপাড়া ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তারেক হোসেন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
‘ছবিতে দেখা যায় এক যুবককে (তারেক) লাঠি দিয়ে পেটাতে দেখা যাচ্ছে। লাঠি হাতে টি শার্ট পরিহিত ব্যক্তি শিক্ষক বকুল হোসেন আকন্দ। তারেকের দুইহাত ধরে আছেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সামছুল মৃধা। এ সময় আশপাশে মারপিটের দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখছেন স্থানীয়রা।’ কেউ একজন ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।
জানা যায়, গোয়ালমান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন ও তুহিনের মাঝে খেলাধুলা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। বিয়ষটি আপোষ করে দেয় ওই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও দাশপাড়া ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তারেক হোসেন।
সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে গন্ডগোল হচ্ছে জেনে গত ৬ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক বকুল হোসেন আকন্দ, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সামছুল মৃধা, আবু বাক্কার ও ছানোয়ার হোসেন গোয়ালমান্দা সুইচগেইট সংলগ্ন একটি দোকানের কাছে যান। এ সময় সামছুল মৃধা তারেক হোসেনের হাত ধরে থাকলে শিক্ষক বকুল হোসেন আকন্দ লাঠি দিয়ে তাকেসহ তিনজন শিক্ষার্থীকে মারপিট করে। এমন একটি ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার আশায় তারেক হোসেন পরদিন মান্দা থানাায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী রাব্বি জানান, আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী রিফাত ও তুহিনের মধ্যে কি একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সে সময় আমি স্কুলে ছিলাম না। এ বিষয়টা স্যার না বুঝে আমার ও তারেককে মারপিট করে। বুধবার বিষয়টি নিয়ে মেম্বারসহ স্থানীয়রা আপোষ করে দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ও স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তারেক হোসেন বলেন, দাশপাড়া ডিগ্রি কলেজে পড়াশুনা করছি। ওই স্কুলের দুইজন ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। যা আমি জানিনা। কিন্তু শিক্ষক বকুল হোসেন আকন্দ না বুঝে স্কুলের বাহিরে স্লুইচ গেটে আমাদের অমানবিক ভাবে লাঠি দিয়ে মারধর করেছেন। বিয়ষটি নিয়ে বিচার চেয়ে পরদিন ৭ এপ্রিল (শুক্রবার) থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। পরে স্থানীয়ভাবে ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার গ্রামের মাতব্বর ও মেম্বার আপোষ করে দেয়।
অভিযুক্ত সহকারি শিক্ষক বকুল হোসেন আকন্দ বলেন, গত এক বছর ধরে তারেক হোসেনসহ কয়েকজন স্কুলের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল। সে আমাদের স্কুলের সাবেক ছাত্র। এছাড়া স্কুলের ছাত্রদের অকারণে ধরে নিয়ে গিয়ে মারপিট করতো। স্কুল ছুটি থাকলেও স্কুলের কোচিং চালু আছে। ঘটনার দিন তারা স্কুলের এক ছাত্রকে ধরে নিয়ে গিয়ে মারপিট করছে দেখে কয়েকজন ছাত্র স্কুলে এসে আমাদের জানায়। আমরা কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে গিয়ে তারেক হোসেনকে লাঠি দিয়ে ২-৩ টা মারধর করে নির্যাতিত ছাত্রকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়। পরে তারেক এর অভিভাবককে বিষয়টি জানানো হয়। ঘটনা আপোষ হয়েছে। এ নিয়ে ঝামেলা হওয়ারও কথা না।
স্থানীয় নুরুল্যাবাদ ইউনিয়নে মেম্বার আবু সাঈদ জালাল চঞ্চল হোসেন বলেন, খেলাধুলার বিষয় নিয়ে ওই স্কুলের বর্তমান ছাত্র ও সাবেক ছাত্রের মধ্যে মারপিট হয়। পরে দুইজন শিক্ষক গিয়ে শান্ত করে মারধর করে। বিষয়টি বড় আকার ধারণ করার আগেই এলাকাবাসীসহ ছাত্রদের অভিভাবকদের ডেকে ১১ এপ্রিল আপোষ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকরা অভিভাবকদের হাত ধরে আপোষ হয়।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Posted ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin