রাশিয়ার বিরুদ্ধে রণক্ষেত্রে প্রতিরোধের পাশাপাশি সমানতালে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত কয়েকদিন টানা বিদেশ সফর করেছেন। এই সময়ে তিনি ভ্যাটিকান সিটি থেকে শুরু করে সৌদি আরবে আরব লিগের বৈঠক, এমনকি জাপানে অনুষ্ঠিত জি৭ সম্মেলনেও যোগ দিয়েছেন। এসব সফরে তিনি ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দেশগুলোকে।
জেলেনস্কির এ কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপের বিপরীতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কোনো কর্মকাণ্ডেই দেখেনি বিশ্ব। ফলে তিনি ক্রমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। খবর ইউরোনিউজের।
বসন্তে ইউক্রেন প্রবল পাল্টা হামলা চালাবে বলে মনে করেছিল বিশ্ব। তবে সম্প্রতি জেলেনস্কি ঘোষণা দেন আরও কিছু দিন সময় লাগবে প্রস্তুতির জন্য। এই ফাঁকে তিনি কূটনৈতিক সফর শুরু করেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিনি ইতালি, ভ্যাটিকান, জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেন সফর করেন। সর্বশেষ গত শনিবার যোগ দেন জি৭ সম্মেলনে।
এই সময়ে পুতিন নিজ দেশেই ছিলেন। দক্ষিণ রাশিয়ার শহর পিয়াতিগোর্স্কে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করেন তিনি। রুশ নেতা এখন অকল্পনীয় আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতার মুখে পড়েছেন। কারণ, তাঁর মাথার ওপর ঝুলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এ কারণে মস্কোর মিত্রসহ অনেক দেশে ভ্রমণ তাঁর জন্য জটিল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে রাশিয়া ইউরোপ এশিয়া স্টাডিজের ব্রাসেলসভিত্তিক সেন্টারের পরিচালক থেরেসা ফ্যালন বলেন, ইউক্রেনে আগ্রাসনের সঙ্গে পুতিন জুয়া খেলেছেন। এতে তিনি অধিকাংশ সময় হেরেছেন।
এদিকে, টানা ১০ মাস লড়াইয়ের পর অবশেষে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহর দখলের দাবি করেছে রাশিয়া। শহরটিতে যুদ্ধ শেষ বলে রোববার ঘোষণা দেন পুতিন। এ সময় রুশ সেনা ও ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপকে অভিনন্দন জানান তিনি। তবে এ দাবি অস্বীকার করেছে কিয়েভ। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বাখমুত ইউক্রেনের দখলেই আছে।
জি৭ সম্মলনে জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে পুরো অনুষ্ঠানকে ‘প্রোপাগান্ডা শো’তে পরিণত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে মস্কো। এক বিবৃতিতে সম্মেলনের আলোচনাকে রাশিয়া ও চীনবিরোধী বলে অভিহিত করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্মেলনে জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘ওয়াশিংটন ও কিয়েভের অন্য সমর্থকরা ভীত হবে না। আমাদের সিদ্ধান্ত ভাঙতে পারবেন না পুতিন।’ এ সময় তিনি ইউক্রেনের জন্য আরও ৩৭৫ মিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তার নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেন।