নাকে স্প্রে করার কভিড টিকার পরীক্ষা বর্তমানে ‘হতাশাজনক’ অবস্থাতে থাকলেও ভবিষ্যতে শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞদের। ভাইরাসের মতো একই পন্থায় শরীরে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার একটি সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে এসেছে এ ধরনের ‘নেজাল স্প্রে’। এ ছাড়া সঠিকভাবে প্রয়োগে কভিডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে আসবে অনেকটাই।
গত মাসেই চীন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে সূচমুক্ত টিকায় অনুমোদন দিয়েছে। ওই টিকা নেবুলাইজার ডিভাইসের মাধ্যমে নাক ও মুখ দিয়ে নিতে হয়।
চীনের ওই অনুমোদনের কয়েক দিন পরেই দেশীয় ভাবে তৈরি নাকের ড্রপ জাতীয় কভিডি টিকায় অনুমোদন দিয়েছে ভারত। গত সপ্তাহে অক্সফোর্ডের গবেষকরাও নাকে স্প্রে করার কভিড টিকার প্রথম ধাপের পরীক্ষার ব্যাপারে জানান।
ওই ট্রিকার ট্রায়ালের প্রধান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির স্যান্ডি ডগলাস বলেন, ‘এই গবেষণায় আমাদের প্রত্যাশানুযায়ী কাজ করেনি নাকে নেওয়ার স্প্রে। এই ফলাফল চীনের সাম্প্রতিক ডেটা থেকে অনেকটাই ভিন্ন। কারণ সেটি বলছে আরো জটিল নেবুলাইজার ডিভাইসের মাধ্যমে এ ধরনের টিকা ফুসফুসের গভীরে পৌঁছে দিতে ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
তিনি আরো বলেন, ব্যর্থ হওয়ার ‘একটি কারণ হতে পারে, বেশির ভাগ নাকের স্প্রেই শেষ পর্যন্ত গলাধঃকরণের মাধ্যমে পাকস্থলীতে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।’
বেলফাস্টের কুইনস ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট কনার ব্যামফোর্ড বলেছেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফলাফল নিয়ে নিরুত্সাহিত না হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ঠিক কী কারণে নাকের স্প্রে প্রয়োগের পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছে, সে বিষয়টির অনুসন্ধান গবেষকদেরকে টিকার আরো কার্যকরী ভবিষ্যত সংস্করণ তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।
করোনা মহামারি শুরু থেকে নাকের মাধ্যমে প্রয়োগযোগ্য কার্যকর টিকা উদ্ভাবনে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ এ ধরনের টিকা ইনজেকশনের মাধ্যমে টিকা প্রদানের চেয়ে বেশি সহজ। তাছাড়া করোনাভাইরাস যেহেতু নিঃশ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে আক্রমণ করে, তাই নাকে প্রয়োগযোগ্য টিকার মাধ্যমে এ ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
