নিজস্ব প্রতিবেদক | রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট
ক্যান্সার আক্রান্ত কিশোরী অ্যালিসার চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হয় সবধরনের থেরাপি ও পদ্ধতি। সব থেরাপি ও পদ্ধতি ব্যর্থতায় পর্যবেসিত হয়। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন থেরাপিতে সেরে ওঠেছেন অনিরাময়যোগ্য রক্তের ক্যান্সার আক্রান্ত অ্যালিসা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের চিকিৎসকরা ‘বেস ইডিটিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে অ্যালিসার রক্তের ক্যান্সারের চিকিৎসা করেন। মাত্র ছয় বছর আগে আবিস্কার করা পদ্ধতিতে বিশ্বের প্রথম ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি হিসেবে অ্যালিসাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের মার্চে টি-সেল অ্যাকিউট লাইমফোব্লাস্টিক রক্তের ক্যান্সার ধরে পড়ে ১৩ বছর বয়সী বালিকা অ্যালিসার। টি-সেল শরীরের রক্ষক হিসেবে কাজ করে থাকে। শরীরের মধ্যে থাকা ঝুঁকি দূর করে এটি। কিন্তু অ্যালিসার শরীরে টি-সেল নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়তে থাকে। তাকে ক্যান্সার থেকে সারিয়ে তুলতে ক্যামোথেরাপি ও পরবর্তী বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। তবে এগুলো তার শরীর থেকে ক্যান্সার নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়।
এরপর ‘বেস ইডিটিং’ নামের নতুন থেরাপি ব্যবহার করেন তারা। এর ছয় মাস পর অ্যালিসার শরীরে আর ক্যান্সার পাওয়া যায়নি। তবে এখনো অ্যালিসাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, অ্যালিসাকে দিয়ে নতুন এ থেরাপির পরীক্ষা করা হয়েছে। যদি তারা এ পদ্ধতি প্রয়োগ না করতেন তাহলে অ্যালিসা ‘যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন’ পর্যন্ত যেন খুব বেশি কষ্ট না পান সে ধরনের ওষুধ দেওয়া হত। কারণ তার শরীরের ক্যান্সার নিরাময়ের কোনো ওষুধ বা পদ্ধতি আর অবশিষ্ট ছিল না।
যখন চিকিৎসকরা নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার কথা অ্যালিসা ও তার পরিবারকে জানায় তখন অ্যালিসাই জানায় পরীক্ষামূলক এ চিকিৎসা করাতে প্রস্তুত। গ্রেট ওরমন্ড হাসপাতালের প্রফেসর ওয়াসিম কাসিম বলেন, এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নেয়া প্রথম ব্যক্তি হলেন অ্যালিসা।
ক্যান্সারের নতুন পদ্ধতির চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর অ্যালিসা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারণ তার শরীরে যে সেলগুলো প্রবেশ করানো হয় সেগুলো ক্যান্সারের সেলের সঙ্গে তার শরীরের রক্ষক সেলেরও ক্ষতি করছিল। এ কারণে মাঝে এ চিকিৎসা স্থগিত করে দেওয়া হয় এবং অ্যালিসার আবারও বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়।
তিন মাস পর যখন আবার তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় তখন তার শরীরে ক্যান্সারের সেল পাওয়া যায়। যা চিকিৎসকদের উদ্বিগ্ন করে দেয়। কিন্তু পরের দুই মাসের পরীক্ষায় তার শরীরে ক্যান্সার সেলের আর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এদিকে যেসব শিশু রক্তের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তারা গতানুগতিক চিকিৎসাতেই সেরে ওঠে। কিন্তু অ্যালিসার মতো যারা কঠির রক্তের ক্যান্সারে আক্রান্ত তাদের মতো ১০-১২ জন প্রতি বছর এ চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে সেরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
Posted ৬:২২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
ajkerograbani.com | Salah Uddin