বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের নোনাজলে লাখো পর্যটক

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

দেশের দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা লাখো পর্যটক মেতেছেন সাগরের নোনাজলে। ফলে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত সাগরতীর। বালিয়াড়ি থেকে নোনাজল, সবখানেই আনন্দ আর উচ্ছ্বাস।

তবে ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, নগর জীবনের যান্ত্রিকতা ভুলতে নীল জলরাশি টানে কক্সবাজার ছুটে আসা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘোড়া পিঠে, জেড স্কি ও বিচ বাইকে চড়ে অনেকেই তুলছেন ছবি। আর ভাসমান বস্তু নিয়ে সাগরের নোনাজলে ভাসতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন লাইফ গার্ড সংস্থার সদস্যরা।

শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) হওয়ায় সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে যেন উৎসবের আমেজ। সবাই মেতেছেন আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে। বালিয়াড়ি পেরিয়ে সাগরের নোনাজল। সবখানে পর্যটকের ভিড়। নগর জীবনের যান্ত্রিকতা ভুলে নীল জলরাশিতে মাতোয়ারা সব বয়সি মানুষ।

সুগন্ধা পয়েন্টে সমুদ্রস্নানরত পর্যটক রিয়াদুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য, যা কক্সবাজার সৈকতে আসলে দেখা মিলে। তবে তা শীত মৌসুমেই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় লাগে। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে কক্সবাজার ছুটে আসা। পরিবেশটা যেমন উপভোগ করছি, সৈকতে ঠিক তেমনি প্রশান্তিও খুঁজে পাচ্ছি।

আরেক পর্যটক শিহাব খান বলেন, শুক্র ও শনিবার; এই দুদিন সাপ্তাহিক ছুটির কারণে কক্সবাজার সৈকতে প্রিয়জনকে নিয়ে ভ্রমণে আসলাম। সাগরে গোসল, দৌড়াদৌড়ি, ছবি তোলা ও সমুদ্র ভ্রমণ বেশ উপভোগ করছি।

সৈকতের বালিয়াড়ি ও নোনাজলে পর্যটকদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের রাইড। সাগরজলের জেড স্কি, বালিয়াড়ির বিচ বাইক ও ঘোড়ার পিঠে চড়ে আনন্দ উদ্‌যাপন করছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

ঘোড়ার পিঠে চড়া সাকিয়া রহমান বলেন, ছোট বেলায় কক্সবাজার সৈকতে এসে ঘোড়ার পিঠে উঠেছিলাম। এরপর দীর্ঘ সময় আর ঘোড়ার পিঠে ওঠা হয়নি। কিন্তু এখন স্বামীর সঙ্গে কক্সবাজার সৈকতে বেড়াতে এসে ঘোড়ার পিঠে উঠলাম ও ছবি তুললাম। এখন মনে পড়ছে সেই ছোট বেলায় ঘোড়ার পিঠে উঠার স্মৃতি।

জেড স্কিতে উঠে নীল জলরাশি দেখে আসা পর্যটক রিদিয়া রহমান বলেন, সত্যিই অনেক রোমাঞ্চকর জেড স্কিতে করে সাগরের নীল জলরাশি দেখার ভ্রমণ। জেড স্কি উঠে গভীর সাগরে যাওয়ার পর একটু ভয় লেগেছিল। কিন্তু পরে তীরে ফিরে আসার সময় যখন ঢেউয়ের আঘাতে জেড স্কি ওপরের দিকে উঠে গেল তখন বেশি ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু অনেক ভালো ছিল জেড স্কিতে ঘুরা।

সাগরজলে আনন্দ করতে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনায় পড়ছেন। এ জন্য নিরাপত্তায় তৎপর লাইফ গার্ড কর্মীরা।

সি সেইফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড সাইফুল্ল্যাহ সিফাত বলেন, শীত মৌসুমে সাগর শীতল থাকার কারণে অনেক পর্যটক টিউব নিয়ে সাগরে গা ভাসিয়ে অনেক দূরে চলে যায়। কিন্তু সামান্য ঢেউয়ের আঘাতে টিউব যখন উল্টে যায় তখন পর্যটকরা দুর্ঘটনার শিকার হন। প্রতিদিনই সৈকতের ৩টি পয়েন্ট হতে ৩০ জনের বেশি পর্যটককে টিউব থেকে উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা শিকার হতে উদ্ধার করতে হচ্ছে।

মো. জহিরুল ইসলাম আরও বলেন, পর্যটক কক্সবাজার সৈকতে আনন্দ করতে এসে অচেতন হয়ে পড়ে। কোনো নির্দেশনা মানে না। তাই সব পর্যটকের প্রতি অনুরোধ থাকবে, সাগরজলে সমুদ্রস্নানের সময় যাতে তারা লাইফ গার্ড কর্মীদের নির্দেশনা মানেন। আর লাইফ গার্ড কর্মীরা সবসময় ৩টি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক ৩ স্তরের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। আর পর্যটন স্পটে হয়রানি রোধে মাঠে আছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ দল।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]