বৃহস্পতিবার ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাষাশহীদ শিশু অহিউল্লাহকে মনে রাখেনি কেউ!

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট

ভাষাশহীদ শিশু অহিউল্লাহকে মনে রাখেনি কেউ!

আজ ২১ ফেব্রুয়ারি। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বীর সেনানী ভাষাশহীদদের। তবে ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের মাত্র কয়েকজনের নাম-পরিচয় আমরা জানি।

আমরা যাদের কথা জানি, তাদের বাইরেও ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন অনেকে। এদের মধ্যে আট বা নয় বছরের এক শিশু ভাষাশহীদ অহিউল্লাহ।

যদিও অহিউল্লাহর ব্যাপারে খুব বেশি তথ্য জানা যায়নি। তার বাবার নাম হাবিবুর রহমান। তিনি পেশায় ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি। শহীদ হওয়ার সময় অহিউল্লাহ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘দৈনিক আজাদ’ পত্রিকায় অহিউল্লাহর শহীদ হওয়ার খবর ছাপানো হয়। সেখানে বলা হয়, সেদিন নবাবপুর রোডে খোশমহল রেস্টুরেন্টের সামনে গুলিবিদ্ধ হয় শিশুটি। ঘাতকের গুলি লাগে অহিউল্লাহর মাথায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে সে। খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে অহিউল্লাহর বাবা হাবিবুর রহমান ছেলের লাশ নিতে চাইলেও পাকিস্তানি সেনারা লাশটি নিতে দেয়নি। পরবর্তী সময়ে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। যদিও পরে তার কবরের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

গণ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘ভাষা আন্দোলন ও ভাষাসংগ্রামীগণ’ গ্রন্থে ভাষাশহীদ অহিউল্লাহ সম্পর্কে ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক জানান, ‘অহিউল্লাহ শহীদ হন ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। তখন তার বয়স মাত্র আট বছর এবং তিনি তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তিনি ছিলেন রাজমিস্ত্রি হাবিবুর রহমানের ছেলে। ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি নবাবপুর রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ তারিখের দৈনিক আজাদে তার মৃত্যুসংবাদ ছাপা হয়।’

কবি আহমদ রফিক তার ‘একুশ থেকে একাত্তর’ বইয়ে নিহতদের মধ্যে শিশু অহিউল্লাহর নামও উল্লেখ করেছেন।

এছাড়া ভাষাশহীদ অহিউল্লাহর মরদেহ প্রত্যক্ষকারী ছিলেন তৎকালীন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্র ভাষাসংগ্রামী ডা. মেজর (অব.) মোহাম্মদ মাহফুজ হোসেন। ১৯৯৬ সালে সেবা পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত আত্মজীবনী ‘আমার জীবনের সত্তর বছর’ গ্রন্থে অহিউল্লাহর কথা উল্লেখ করেছেন।

বইটির ২৮ পৃষ্ঠায় মাহফুজ হোসেন লিখেছেন, ‘সেইদিনই (২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২) দুপুরবেলায় নবাবপুর রোডের মানসী হলের সম্মুখে স্কুলের ছাত্রদের একটি মিছিলের ওপর টহল মিলিটারির গাড়ি থেকে গুলি ছোড়া হয়। সেই জায়গায় সফিউল্লা (হবে অহিউল্লাহ) নামে ৯ বছর বয়সের একটি ছাত্র গুলিবিদ্ধ হইয়া মারা যায়। তাহার লাশ মেডিকেল মর্গে দেখিয়াছি। বুকের পকেটে তাহার নিজ হাতে থাকা প্রজাপতি সংবলিত এক টুকরা কাগজ ছিল।’

পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালে ‘ভাষা আন্দোলন গবেষণাকেন্দ্র ও জাদুঘর’-এর উদ্যোগে বর্ণনাভিত্তিক অহিউল্লাহর একটি ছবি আঁকেন শিল্পী শ্যামল বিশ্বাস।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]