নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট
প্রেমিকা ও তার পরিবারের লোকজনের সামনেই নিজের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলেছে— আত্মহত্যা। তবে মৃতের পরিবারের দাবি, ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনাটি কলকাতার বাগুইআটির অশ্বিনীনগরের।
বাগুইআটি থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সৌম্যদীপ সাহা (২৬)। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ারই এক তরুণীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। রোববার রাতে তাদের দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি হয়। তার পরে প্রেমিকার সামনেই ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় ঐ যুবকের। পুলিশ ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে করলেও মৃতের পরিবারের অভিযোগ, সৌম্যদীপকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সৌম্যদীপের মা রীতা সাহার দাবি, ঝগড়া চলাকালীন তার ছেলেকে ছাদ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য একাধিক বার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে।
ঐ যুবকের বাড়ি অশ্বিনীনগরের পূর্বাশা এলাকায়। আকস্মিক এ ঘটনায় স্তম্ভিত প্রতিবেশীরাও। তারা জানান, রাতের দিকে বাড়ির নীচে চেঁচামেচি শুনেছিলেন তারা। সেই ঘটনা যে যুবকের মৃত্যু পর্যন্ত গড়াবে, তা ভাবতে পারেননি।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
সৌম্যদীপের পরিবারের লোকজনের দাবি, তারা ঐ তরুণী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বাগুইআটি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্তকারীরা প্রাথমিকভাবে জেনেছেন, গত এক বছর ধরে ঐ তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সৌম্যদীপের। তার মৃত্যুর পরে তরুণী ও তার মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বাগুইআটি থানার পুলিশ।
তবে দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে প্রাথমিকভাবে যে তার আপত্তি ছিল, সে কথা স্বীকার করেছেন সৌম্যদীপের মা। যদিও সেই সঙ্গে তার দাবি, আমি পরে ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলাম। ছেলে নতুন চাকরি পেয়েছে। ওকে বিয়ের জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ছেলে সময় চাইছিল। তা নিয়েই অশান্তি হয়। ঐ মেয়েটি, ওর মা এবং সঙ্গে থাকা কয়েকজন এমনভাবে বাড়ির নীচে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছিলেন যে, সবাইকে আমরা বাড়ির ভিতরে আসতে বলি। ছেলের সঙ্গে ওদের তুমুল ঝগড়া হয়। ছাদে উঠেই কথা হচ্ছিল। আমার মনে হয়, ঝগড়ার সময়ে ওকে ছাদ থেকে ধাক্কা মারা হয়েছে।
সেই সময়ে তিনি ঘরে তার অসুস্থ স্বামীকে সামলাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন রীতা।
পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের পরিবারের তরফে দু’দফায় অশান্তির কথা জানানো হয়েছে। প্রথমে এক দফা গোলমালের পরে তরুণীরা চলে যান। পরে রাতের দিকে আবার তারা ফিরে আসেন। ঘটনার সময়ে তরুণীর সঙ্গে তার এক বন্ধুও ছিলেন। তিনিও সৌম্যদীপের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বলে জেনেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরে তরুণীকে এক জনের বাইকে চেপে চলে যেতেও দেখা যায়।
Posted ৮:০১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৭ মার্চ ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin