নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট
গাইবান্ধায় চাঞ্চল্যকর অটোরিকশা চালক রুবেল হোসেনকে (২২) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মাদক কেনার টাকা যোগার করতেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তারপর তার অটোরিকশা ছিনতাই করে সাড়ে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। গত ১৯ এপ্রিল রাতে সাঘাটা উপজেলার বাদিনারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রুবেল হোসেনকে হত্যা করে তারা।
শুক্রবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. কামাল হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ২০ এপ্রিল সাঘাটা উপজেলার বাদিনারপাড়া গ্রামের একটি ভুট্টার জমি থেকে রুবেল হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রুবেল একই উপজেলার পবনতাইড় গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। ঐদিন রাতে সাঘাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলায় কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়।
পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার জিরাবো এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সাঘাটা উপজেলার বাদিনারপাড়া গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে ওবায়দুল ইসলাম (২৪) ও রুবেল মিয়া (২২) এবং বরিশাল জেলার গুয়াবাড়ীয়া গ্রামের শামসুল হক চৌকিদারের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩২)। গ্রেফতারকৃত ওবাইদুলের কাছ থেকে নিহত রুবেল হোসেনের ব্যবহৃত মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য মতে, চুরি যাওয়া অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত আরো দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- সাঘাটা উপজেলার বারকোনা গ্রামের মৃত মহাসিন আকন্দের ছেলে সাজু মিয়া (৪০) ও একই গ্রামের মৃত চশমতুল্লা আকন্দের ছেলে রেজাউল করিম (৫০)। ক্রেতাদের কাছ থেকে অটোরিকশার অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়।
হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ওবাইদুল, রুবেল ও জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, তারা তিনজনই ঢাকার জিরাবো এলাকায় একসঙ্গে এধরনের বিভিন্ন কার্মকাণ্ডে জড়িত। তারা সেখানে একই ভাড়া বাসায় থাকতো। ওবাইদুল, রুবেল ও জসিম তিনজনই মাদকাসক্ত। মাদক কেনার টাকা যোগাতে তারা ঘটনার দুইদিন আগে তিনজন একত্রে সাঘাটা নিজ এলাকায় আসে। পরে অটোরিকশা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। তারা পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন ১৯ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে তারা রুবেল হোসেনের অটোরিকশা ভাড়া নেয়।
অটোরিকশায় সাঘাটা বাজার থেকে নিজ বাড়ি বাদিনারপাড়া গ্রামের দিকে নিয়ে রওনা দেয়। পথে নির্জন এলাকায় অটোরিকশা চালক রুবেলকে তার ব্যবহৃত চাদর গলায় পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে এবং মৃতদেহ পাশের ভুট্টার জমির ভিতর ফেলে রাখে। পরে তারা অটোরিকশাটি সাজু ও রেজাউলের কাছে সাড়ে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে ও তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নিয়ে রাতেই ঢাকায় ফিরে যায়।
এসব বিষয়ে সাঘাটা থানার ওসি রাজু সরকার বলেন, প্রেস ব্রিফিংয়ের পর গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের জন্য আদালতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পরে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।
Posted ১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৩
ajkerograbani.com | Salah Uddin