সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরীক্ষায় নকল করা কবিরা গুনাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট

পরীক্ষায় নকল করা বা অনৈতিক কোনো কিছু অবলম্বন করা নাজায়েজ ও হারাম। অনেক ফিকাহবিদ পরীক্ষায় নকল করাকে হারাম ও কবিরা গুনাহ বলেছেন। চাই তা অন্য কারো কাছ থেকে দেখে লেখা হোক বা কারো কাছ থেকে শুনে লেখা হোক বা গোপনে নিজের কাছে থাকা লেখা কাগজ বা বই থেকে দেখে দেখে লেখা হোক অথবা এ ক্ষেত্রে অন্য যেকোনো অসদুপায়ে করা হোক। কেননা, এটা প্রতারণা। আর ইসলামে প্রতারণা করা হারাম ও কবিরা গুনাহ।

প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়; আর যে ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে, সেও আমাদের দলভুক্ত নয়’। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০১/১৮৯)

হাদিস বিশারদগণ বলেছেন, যেকোনো কাজে-কর্মে প্রতারণা করা- এই হাদিসের আওতাভুক্ত। ফলে পরীক্ষায় প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টিও সেগুলোর মধ্যে একটি।

পরীক্ষায় নকল করা সম্পর্কে শায়খ বিন বাজ এর বক্তব্য

পরীক্ষায় নকলের ব্যাপারে শাইখ বিন বাজ (রহ.) বলেন, ‘পরীক্ষায় নকল করা মানুষের সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে প্রতারণার মতোই হারাম ও ন্যাক্কারজনক। বরং সাধারণ লেনদেনের চেয়ে পরীক্ষায় নকল করা- বেশি ভয়ানক হতে পারে। কারণ, নকলের মাধ্যমে সে হয়ত বড় বড় চাকরি লাভ করবে। সুতরাং পড়াশোনার সব ক্ষেত্রে নকলের আশ্রয় নেওয়া হারাম। কেননা, সহিহ হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়’।

তাছাড়া এটি একটি খেয়ানত বা বিশ্বাসঘাতকতা। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা জেনে-শুনে খেয়ানত করো না আল্লাহ ও রসূলের সঙ্গে এবং খেয়ানত করো না নিজেদের পারস্পরিক আমানতের ক্ষেত্রে’। (সূরা: আনফাল, আয়াত: ২৭)

সুতরাং শিক্ষার্থীদের জন্য আবশ্যক হলো- তারা যেন কোনো পাঠ্য বিষয়েই নকলের আশ্রয় না নেয়। বরং তারা যেন প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অধ্যবসা ও পরিশ্রম করে যেন তারা বৈধভাবে উত্তীর্ণ হয়।’ (শাইখের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট)

নকলের কাজে সহযোগিতা হারাম

নকল করা যেমন হারাম তেমনি নকলে সহযোগিতা করাও হারাম। ছাত্র-ছাত্রীরা যেমন নকল করলে গুনাহগার হবে- তেমনি পরীক্ষা হলে নিয়োজিত গার্ড, শিক্ষক, পরিদর্শক অথবা তৃতীয় কোনো পক্ষ যদি নকল করতে সহায়তা করে বা নকলের পরিবেশ সৃষ্টি করে- তাহলে তারাও গুনাহগার হবে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘সৎকর্ম ও আল্লাহ ভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কঠোর শাস্তি দাতা’। (সূরা: মায়িদা, আয়াত: ২)

কেউ যদি খাতা দেখে লিখতে চায়

সুতরাং পরীক্ষার হলে কেউ যদি আপনার নিকট উত্তর জানতে চায় বা আপনার খাতা দেখে লিখতে চায়; তাহলে তাকে সে সুযোগ দেওয়া যাবে না। অন্যথায় অন্যায় কাজে সহায়তার কারণে আপনিও গুনাহগার হবেন। তাছাড়া পরীক্ষায় নকলে সহায়তা করা আইনত: দণ্ডনীয় অপরাধ। (পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইন-১৯৮০ অনুযায়ী, পরীক্ষার হলে নকলের সুনির্দিষ্ট শাস্তি রয়েছে)

অতএব পরীক্ষার হলে, কেউ যদি আপনার খাতা দেখে লিখতে চায় বা কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় তাহলে আপনার জন্য আবশ্যক হলো, তাকে সহযোগিতা না করা। কারণ তা প্রতারণায় সহযোগিতার শামিল-যা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম এবং প্রচলিত আইনেও দণ্ডনীয় অপরাধ।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(145 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]