বৃহস্পতিবার ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাবার পর পৃথিবীর সর্বোত্তম স্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২১ জুন ২০২৩ | প্রিন্ট

কাবার পর পৃথিবীর সর্বোত্তম স্থান

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার অসংখ্য পবিত্র নিদর্শনের মধ্যে পবিত্র কাবা শরিফের পরেই গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র নিদর্শন মসজিদে নববী।

মহিমান্বিত এ মসজিদে নববী অর্থ নবীজির মসজিদ। এই মসজিদটিই হচ্ছে পৃথিবীর সর্বোত্তম ও পবিত্র স্থানের মধ্যে দ্বিতীয়। যেথায় মহব্বত সহকারে এক রাকাত নামাজ পড়লে ৫০ হাজার রাকাত কবুল হওয়া নামাজের সওয়াব পাওয়া যায়।

মসজিদে নববীর গুরুত্ব ও মর্যাদা নিয়ে কোরআন-হাদিসের অসংখ্য নির্দেশনা রয়েছে। যেটি সৌদি আরবের মদিনায়ে মুনাওয়ারায় অবস্থিত। এই মসজিদের অভ্যন্তরে দক্ষিণে অবস্থিত হজরত (সা.)-এর রওযায়ে আক্দাস শরিফ। যা পবিত্র খানায়ে কাবার পর পৃথিবীর সর্বোত্তম স্থান হিসেবে স্বীকৃত।

নির্মাণকাল

নবীজি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন, তখন এ শহরটির নাম ছিল ‘ইয়াসরিব’। নবীজি (সা.) আগমনের পরপরই ইয়াসরিব নামটি পবির্তন করে মদিনা নামকরণ করেন। কিন্তু সেখানে কোনো মসজিদ ছিল না যেখানে নবীজি (সা.)-সহ সাহাবীরা নামাজ আদায় করবেন।

নতুন হিজরতকারীদের মধ্যে নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের শূন্যতা দেখা দিলে নবীজি (সা.) নিজেই একটি মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন। আর এ মসজিদের নাম দেন ‘মদিনা মসজিদ’। যা ‘মসজিদে নববী’ বা মদিনায়ে মুনাওয়ারা হিসেবে পরিচিত।

প্রথম মসজিদটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছিল প্রায় ৭ মাস। অর্থাৎ- ৬২২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে থেকে শুরু হয়ে ৬২৩ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ৭ মাসব্যাপী ১ম মদিনা মসজিদের নির্মাণ কাজের সময় ধরা হয়।

নির্মাণ প্রক্রিয়া

নবীজি (সা.)-এর হস্ত মোবারকে ভিত্তি দেওয়া পবিত্র ‘মদিনা মসজিদ’ নির্মাণের জন্য নাজ্জার গোত্রের সাহল ও সোহাইল নামক দুই যুবক থেকে প্রয়োজনীয় জমি ক্রয় করে ছিলেন। এ জমির ক্ষুদ্র একটি অংশে নবীজি (সা.) বাসস্থান নির্মাণ করে বাকি পুরো অংশেই মদিনা মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এ জায়গার প্রতিটি কোণা থেকে তীর নিক্ষেপ করে যে পরিমাণ জায়গা পাওয়া গেল তা হলো মসজিদের একটি ক্ষেত্র। আর এ ক্ষেত্রে বর্গের প্রতিটি বাহুর পরিমাণ দাঁড়ালো ১০০ হাত বা ৫৬ গজ।

১ম নির্মিত পবিত্র মদিনা মসজিদের প্রাথমিক আয়তন ছিল ১০০ ´ ১০০ হাত বা ৫৬ ´ ৫৬ গজ। মসজিদের ভিত্তি ও দেয়ালের নিম্নভাগ ৩ হাত পর্যন্ত প্রস্তের হিসেবে নির্মিত ছিল।

প্রথম পর্যায়ে মদিনা মসজিদ রৌদ্রে শুষ্ক ইট দ্বারা নির্মিত হয়। এই রৌদ্র শুষ্ক ইট ও সিমেন্ট হিসেবে আল-খাবখাবা উপত্যকা হতে আনিত কাদা দ্বারা তৈরি হয়েছিল। তখন মদিনা মসজিদের দেয়াল ছিল ৭ হাত উঁচু। এর ছাদকে শক্তিশালী ও মজবুত রাখার জন্য মদিনা মসজিদের ৩৬টি খেজুর গাছকে স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।

মসজিদের ছাদ নির্মিত হয়েছিল খেজুর পাতা দিয়ে। ছাদকে সুন্দর, রৌদ্র ও বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য খেজুর পাতার ওপর কাদামাটির আস্তরণ লেপে দেওয়া হয়েছিল।

১ম নির্মিত পবিত্র মদিনা মসজিদে প্রবেশের জন্য ৩টি দরজা ছিল। প্রধান প্রবেশ পথটি ছিল দক্ষিণ দিকে যা দিয়ে মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করতেন এবং বাহির হতেন। পশ্চিম দেয়ালে ছিল মসজিদের দ্বিতীয় প্রবেশ পথ যা ‘বাবে রহমত’ নামে স্বীকৃত। তৃতীয় প্রবেশ পথটি ছিল পূর্ব দেয়ালে যা দিয়ে নবীজি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) মসজিদে প্রবেশ করতেন। এ জন্য এটির নামকরণ হয় ‘বাব উন নবী (সা.)’।

ঐতিহাসিকদের মতে, মদিনা মসজিদেই সর্ব প্রথম মেহরাব, মিম্বার, আজান দেওয়ার স্থান বা মিনার এবং ওজুর স্থানের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে মসজিদে নববী বহুগুণ বড় ও সম্প্রসারিত। সম্পূর্ণ আধুনিক নতুন নকশার ভিত্তিতে এটিকে সম্প্রসারণ ও পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। যাহাতে একসঙ্গে কয়েক লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ২:৪২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২১ জুন ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

(146 বার পঠিত)
advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]