বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি ব্যাংকের শেয়ার ছাড়ার অগ্রগতি জানতে চায় বিএসইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০৫ আগস্ট ২০২৩ | প্রিন্ট

সরকারি ব্যাংকের শেয়ার ছাড়ার অগ্রগতি জানতে চায় বিএসইসি

বাজারে সরকারি চার ব্যাংকের শেয়ার ছাড়ার অগ্রগতি জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সম্প্রতি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এ জন্য চিঠি দিয়েছে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে রাষ্ট্র মালিকানার জনতা, অগ্রণী, রূপালী ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে (বিডিবিএল) ২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে শেয়ারবাজারে আনার ঘোষণা দেন। কিন্তু এ ঘোষণা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এ প্রসঙ্গে অগ্রগতি জানতে চাইল বিএসইসি। 

চিঠিতে বিএসইসি বলেছে, পুঁজিবাজার উন্নয়নে রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের শেয়ার পর্যায়ক্রমে আপলোড করতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রথমে রূপালী ব্যাংক এরপর বিডিবিএল এবং তারপর অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের শেয়ার পুঁজিবাজারে পর্যায়ক্রমে আপলোডের সিদ্ধান্ত হয়। ইতোমধ্যে ১৯৮৬ সাল থেকে রূপালী ব্যাংকের ১০ শতাংশ শেয়ার পুঁজিবাজারে রয়েছে। নতুন করে আরও ১৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়।

 

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজারে সরকারি কোম্পানিগুলোর শেয়ার ছাড়া হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ার পাশাপাশি শেয়ারের চাহিদা তৈরি হবে। একই সঙ্গে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে শিল্পায়নে মূলধনের জোগান সম্ভব হবে। তাই কমিশন সব সময় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে শেয়ার আপলোড করার সুপারিশ করে আসছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম সমকালকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতে শেয়ারবাজারে ভালো সরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি প্রয়োজন। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তের পরও এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ শেয়ারবাজারে আসার প্রক্রিয়া শুরু করছে না। রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের পাশাপাশি ২২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে আসার সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অনেক দিন ধরে সরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে আনার আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি কেন– এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলে করপোরেট সুশাসন বাজায় রাখতে সুপারভিশন বাড়ে। সম্ভবত অনেক প্রতিষ্ঠানই এ কারণে শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। অর্থনীতির স্বার্থে উন্নত পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠায় ভালো প্রতিষ্ঠানকে শেয়ারবাজারে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংককে কবে নাগাদ শেয়ারবাজারে আনা সম্ভব হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সমকালকে বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে নিয়মিত তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংকগুলোর পর্ষদ বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছে না।

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মুরশেদুল কবীর সমকালকে বলেন, বিএসইসির এ ধরনের চিঠি তিনি সম্প্রতি পেয়েছেন। বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে আলোচনার পর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, শেয়ারবাজার চাঙ্গা করতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দরকার। আমরা যে কোনো মূল্যে পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে চাই। তাই আগামী অক্টোবরের মধ্যে তিনটি রাষ্ট্রীয় ব্যাংক পুঁজিবাজারে আসছে। এ ছাড়া বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার আরও বাড়ানো হবে।

অর্থমন্ত্রী এমন ঘোষণা দিলেও ওই বৈঠকের কার্যবিবরণী সূত্রে জানা যায়, ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা (এমডি) বৈঠকে মত দেন, শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে তাদের কোনো প্রস্তুতি নেই। প্রস্তুতি কিছুটা ছিল শুধু অগ্রণী ব্যাংকের। তবে প্রতিটি সরকারি ব্যাংক স্বল্পতম সময়ের মধ্যে তাদের পরিচালনা পর্ষদের সভায় শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে আলোচনা করবে বলে তারা জানিয়েছিলেন।

কার্যবিবরণীতে বলা হয়, শেয়ার ছাড়ার কার্যক্রমে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। আইসিবির সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ব্যাংকগুলোর সহযোগী মার্চেন্ট ব্যাংক যৌথভাবে ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া সরকারি ব্যাংকের শেয়ার ছাড়ার কার্যক্রম তদারক করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। প্রাথমিকভাবে অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও বিডিবিএলের ২৫ শতাংশ শেয়ার ছাড়া হবে।

বৈঠকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তখনকার সচিব মো. আসাদুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো ২০০৭ সালে কোম্পানি হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে কয়েকবার বাজারে ব্যাংকগুলোর শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু যথাযথ উদ্যোগের অভাবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায়নি।

 

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:১৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ আগস্ট ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]