রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনপ্রিয় সেই নেতারা এখন বিএনপির ‘খড়কুটো

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট

জনপ্রিয় সেই নেতারা এখন বিএনপির ‘খড়কুটো

বিএনপির রাজনীতিতে ত্যাগী ও জনপ্রিয় হিসেবে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন দলের বেশ কয়েকজন নেতা। জনপ্রিয় সেই নেতারা এখন বিএনপিতে মূল্যহীন হয়ে পড়েছেন। নানা কারণে বিএনপি তাদের বহিষ্কার করেছে। তবে বহিষ্কৃত ঐ নেতাদের ভাষ্যমতে, ঠুনকো কারণে বিএনপি তাদের ছুড়ে ফেলেছে। জনগণের দাবি দলের হাইকমান্ড মানতে চায় না।

ঐ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- নারায়ণগঞ্জের অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দাকার, সিলেটের শমসের মবিন চৌধুরী, খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জু, কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু, কিশোরগঞ্জের আখতারুজ্জামান রঞ্জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া উকিল সাত্তার ভূঞা।

তাদের মধ্যে তৈমূর আলম খন্দকার ও শমসের মবিন চৌধুরী রাগে-ক্ষোভে সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদার দল ‘তৃণমূল বিএনপি’তে যোগ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলটির সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা যোগ দেন।

তৈমূর আলম খন্দকার ও শমসের মবিন চৌধুরীকে নিয়ে গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তারা এখন বিএনপির সদস্য নন। বিএনপি একটি প্রবহমান নদীর মতো। এখানে কত ‘খড়কুটো’ আসে, কত ‘খড়কুটো’ যায়। এতে আমাদের কিছু যায় আসে না।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বহিষ্কৃত ঐসব নেতা বিএনপির জন্য অনেক কিছু করেছেন। স্বার্থে আঘাত লাগার সঙ্গে সঙ্গে জনদাবি উপেক্ষা করে বিএনপি ঐ নেতাদের বহিষ্কার করেছে। বিএনপির রাজনীতিই এমন। কোনো কিছু বিপক্ষে গেলে দলটি তা গ্রহণ করতে পারে না।

জানা গেছে, তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তাকে।

তিনি বলেন, দুঃসময়ে দল আমাকে ত্যাগ করেছে। আমি সুবিধাভোগী নই। ১৯৯৬ সালে বিএনপি বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় আমি যোগদান করি। বিএনপি করতে গিয়ে গুলি খেয়েছি, জেল খেটেছি। ১/১১ তে তারেক রহমানের পক্ষে আইনি লড়াই করেছি। কিন্তু তারা আমাকে মূল্যায়ন করলো না।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু মাঠের রাজনীতিতে ত্যাগী ও জনপ্রিয় হিসেবে পরিচিত ছিলেন। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও লড়াই করেছেন। খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন নিয়ে দলের সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলায় প্রায় দুই বছর আগে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মঞ্জু বলেন, এই বিএনপিকে আমরা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছি। খারাপ লাগে, আমার জন্য খুলনার দুই শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করে দলের রাজনীতি থেকে দূরে আছেন। এখনো অনেক মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরছি। এগুলোর হাজিরা দিচ্ছি।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন শমসের মবিন চৌধুরী। একসময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতও ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০৯ সালে দলের ভাইস চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন। মঙ্গলবার তিনি তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেন।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে মেয়র নির্বাচন করে পরাজিত হন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সদস্য মনিরুল হক সাক্কু। বিএনপির নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নির্বাচন করায় তিনি দল থেকে আজীবন বহিষ্কৃত হন। সাক্কু বলেন, ৪২ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি করি। আমি কুমিল্লার মানুষের চাহিদার কারণেই নির্বাচন করেছি।

তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে টিভি টকশোতে বক্তব্য দিয়ে বিরাগভাজন হন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। এরপরই তাকে বহিষ্কার করা হয়।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]