নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট
দেশে-বিদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘গ্রহণযোগ্যতা’ বাড়াতে নবগঠিত সরকারের প্রচেষ্টাকে মোকাবিলা করাই ভোট বর্জনকারী বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে এবারের ভোটকে প্রধান বিরোধী দলবিহীন ‘একতরফা’ ও ‘ডামি নির্বাচন’ আখ্যায়িত করে বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ রাখতে জোর তৎপরতা চালাবে দলটি। সরকারবিরোধী আন্দোলনের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ‘চাপে’ সরকার যাতে নির্বিঘ্নে আগামী পাঁচ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে না পারে– সে লক্ষ্যকেই প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপি।
একই সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে কম ভোটার উপস্থিতিকে নিজেদের দাবির পক্ষে জনগণের ‘বার্তা’ বলে মনে করছে দলটি। এই বার্তাকে কাজে লাগানোও বিএনপির জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। অবিলম্বে ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচনটি বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বিরোধী দলটি। লক্ষ্য অর্জনে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো, দলকে আরও সুসংহত করতে সরকারবিরোধী সমমনা সব ডান, বাম ও ইসলামী দলকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে হাইকমান্ড।
অবশ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, বিএনপিতে নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। দ্রুত যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্বের মাধ্যমে দল পুনর্গঠন করা জরুরি। বিশেষ করে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে নিষ্ক্রিয়দের বাদ দিয়ে সিনিয়র যোগ্যদের নেতৃত্বে এনে চমক আনতে পারে। কাউকে ছোট চোখে না দেখে সমমনাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে সব বিরোধী দলের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা দূর করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উইংকেও আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করা প্রয়োজন। ভোট বর্জনের মাধ্যমে সরকারের প্রতি জনগণের এত ‘বড় অনাস্থা’ এবং তৃণমূলের ত্যাগকেও কাজে লাগাতে পারেনি বিএনপি।
একই সঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন বড় আন্দোলন না হলেও সরকারের যে কোনো ভুলের ফলে একসময়ে বিরাট গণআন্দোলন হয়ে যেতেও পারে। বিশ্বের অনেক দেশেই আকস্মিক আন্দোলনে ‘কর্তৃত্ববাদী’ সরকারকে বিদায় নিতে হয়। বিএনপিকে সাধারণ ভোটারদের ‘বার্তা’ বুঝে এবং মাথায় রেখেই সামনের দিনগুলোতে কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। গণতন্ত্রের পক্ষে মানুষ ঐক্যবদ্ধ আছে। ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে জনগণ বিএনপিকে সেই বার্তাই দিয়েছে। মানুষের এই বার্তা বিএনপি না বুঝলে তা তাদের ব্যর্থতা। আর সরকার না বুঝলে তাদেরও বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
Posted ৩:১৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin