সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিতাসেরই বিল বকেয়া ১৩ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বৃহস্পতিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট

তিতাসেরই বিল বকেয়া ১৩ হাজার কোটি টাকা

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কোম্পানির কাছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা বিল বকেয়া পড়ে আছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির। সরকারি কোম্পানির গ্যাস বিল আদায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় প্রায়ই আটকে থাকছে।

অপরদিকে গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহ না থাকায় অনেক শিল্পকারখানা প্রায়ই বন্ধ থাকছে। এ কারণে গ্যাস বিল আদায়ে তৎপরতাও দেখাতে পারছে না বিতরণকারী কোম্পানি। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মন্ত্রণালয় থেকে অর্থপ্রাপ্তিসাপেক্ষে গ্যাস কোম্পানিগুলোকে বিল পরিশোধ করছে। ফলে দিন দিন গ্যাস বিল জমে হচ্ছে পাহাড়।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কাছে ১২ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা গ্যাস বিল বকেয়া জমা হয়েছে তিতাসের। এর মধ্যে মামলাসহ নানা কারণে অনাদায়ী হয়ে পড়েছে প্রায় ১৮শ’ কোটি টাকা। আদায়যোগ্য বকেয়া গ্যাস বিলের পরিমাণ ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি গ্রাহকদের কাছে গ্যাস বিল জমা ৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে পাওনা ৯৩৭ কোটি টাকা। ইলেকট্রিক জেনারেশন কোম্পানির (ইজিসিবি) কাছে ১ হাজার ৫৮৪ কোটি, রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানির (আরপিসিএল) কাছে ৪৭ কোটি, সার কারখানার কাছে ৫৯৭ কোটি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আশুলিয়া ও মাধবদীর সমিতির কাছে ১১ কোটি টাকা এবং অন্য সরকারি গ্রাহকদের কাছে ৩৯৪ কোটি টাকা বকেয়া জমেছে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাছে প্রায় ১৪ মাসের বিল বকেয়া পড়ে আছে; যার আর্থিক পরিমাণ ৯ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ক্যাপটিভ পাওয়ার আছে এমন কোম্পানিগুলোর কাছে বকেয়া এক হাজার ৫৩৬ কোট টাকা। শিল্প গ্রাহকদের কাছে বকেয়া এক হাজার ৮০৪ কোটি টাকা, বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে বকেয়া ১১৬ কোটি টাকা, আবাসিক গ্রাহকদের কাছে বকেয়া এক হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা, সিএনজি গ্রাহকদের কাছে গ্যাস বিল বকেয়া ৫৩৬ কোটি টাকা।

এ ছাড়া মৌসুমি গ্রাহকদের কাছে গ্যাস বিল বকেয়া ৫ কোটি টাকা। এদিকে মামলাধীন গ্রাহকদের কাছে বকেয়া এক হাজার ৭৯০ কোটি টাকা, বেসরকারি গ্রাহকদের কাছে মামলা ছাড়া বকেয়া ১ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। সবশেষ মোট আদায়যোগ্য বকেয়া ডিসেম্বর ২৩ পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।

বিপুল অর্থের এই বকেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমে বলেন, সাধারণত শিল্পকারখানাগুলোতে এক মাস, ক্ষেত্রবিশেষে দুই মাসের বিল বকেয়া থাকে। গ্যাস কোম্পানিগুলো তাদের সুবিধামতো শিল্পকারখানার গ্যাস বিল আদায় করে। প্রতি মাসের বিল পরের মাসের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদায় করার চেষ্টা করছে তিতাস। তবে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে অনেক টাকা গ্যাস বিল হয়। সেই টাকা নিয়মিত পরিশোধ করছে না বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এই টাকা আদায় করতে আবার মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দেনদরবার করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, গ্যাস বিতরণ কোম্পানি বিশেষ করে তিতাসকে নিয়মিত এলএনজি আমদানি বাবদ পেট্রোবাংলাকে টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে, অন্যদিকে গ্রাহকদের কাছ থেকে গ্যাস বিল আদায় করতে না পারায় কোম্পানিটি সংকটে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ মোল্লা বলেন, গ্যাস বিল আদায়ে তিতাস অনেক তৎপর। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি পরিমাণে বিল আদায় করা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে প্রতিমাসের বিল পরের মাসের মধ্যে আদায় করতে। তবে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিল আদায়ের সঙ্গে অনেক বিষয় সম্পৃক্ত। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মন্ত্রণালয়ে থেকে অর্থপ্রাপ্তিসাপেক্ষে বিল পরিশোধ করে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বিল আটকে থাকছে।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]