নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০১ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
পরিবার নিয়ে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের দোতলায় থাকা ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন এষা। রেস্টুরেন্টে আগুন ধরলে জানালা দিয়ে বের করে দেন নিজের ছয় বছরের শিশু, ভাই, ভাবি আর দুই ভাতিজাকে। কিন্তু নিজে আর বের হতে পারেননি। ছয় বছরের শিশুকে রেখেই মারা যান ৩৪ বছর বয়সী এষা।
ঘটনার পর হাসপাতলে মরদেহ শনাক্ত শেষে এষার বোন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সবাইকে জানালা দিয়ে বের করে দেয়ার পর আমার বোনটা আর নামতে পারে নাই। ওই সময় ব্লাস্ট (বিস্ফোরণ) হয়ে গেছে।’
এসময় পাশে থাকা এষার ভাই বলেন, ‘শুনতে পারছি আগুন লাগার পর কাচ্চি ভাই থেকে অনেক মানুষকে বের করে দেয়া হয়েছে। এরপর গেট লাগিয়ে দেয়। তখন অনেকেই গ্লাস ভেঙে সামনে দিয়ে বের হচ্ছিল। সবার সাথে আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে বের করে দেয় আমার বোন। এরপর ভাইয়ের দুই বাচ্চা আর বোনের ছয় বছরের বাচ্চাকে বের করে ভাবির কাছে দেয়। এরপর ভাবি বাচ্চাদের নিয়ে নামার সময় পেছনে তাকিয়ে দেখে আমার বোনটা আর নাই। ওই সময়ই একটা ব্লাস্ট (বিস্ফোরণ) হয়।’
এষার ভাই আরও বলেন, ‘আমার বোনের শরীরে কোনো বার্ন (পোড়া চিহ্ন) নাই। মনে হয় ধোয়ায় শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে। ও সবাইকে বাহির করে দিয়ে নিজে বের হতে পারলো না।’
এদিকে, র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ আলম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, নিচের একটি ছোট দোকানে প্রথমে আগুন লেগেছিল। সেখানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে তারা প্রাথমিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন। পরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ মানুষই ধোঁয়ার কারণে শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।
তিনি বলেন, ভবনটিতে একটি মাত্র সিঁড়ি ছিল। দুইটি লিফট ছিল। ভবনের নিচ তলার প্রবেশমুখে আগুন লাগার পর কেউ নামতে পারেনি।
এর আগে সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক বিফ্রিং এ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, এ ঘটনায় দ্বগ্ধ চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরাও শঙ্কামুক্ত নন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
Posted ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ মার্চ ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin