নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০৮ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট
মানুষ চলাচলের কোনো রাস্তা নেই। বিশেষ কোনো প্রয়োজনও নেই সড়কের। তবুও নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ব্রিজের ওপারে বাড়ি নির্মাণ করবেন। ভবিষ্যতে করা বাড়ির চলাচলের সুবিধার্থে তিনি সরকারি খরচে সেতুটি নির্মাণ করেছেন।
তবে অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান রাজুর দাবি, ‘প্রয়োজন কিংবা অপ্রয়োজন’ যাই হোক, ব্রিজতো করেছেন। অনেকের ন্যায় সরকারি প্রকল্পের টাকা লুট করেননি।
সরেজমিনে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রতনপুর এলাকায় রাস্তা ছাড়াই খালি স্থানে ব্রিজটি দেখা যায়। ব্রিজের এক পাশে মান্দারী-দত্তপাড়া সড়ক থাকলেও অন্য পাশে ফসলি জমি। এ ব্রিজটি জনস্বার্থে ব্যবহারেরও সুযোগ নেই। কারণ ব্রিজের বিপরীত পাশের খালি জমিতে বাড়ি করার জন্য সীমানা দিয়ে রেখেছেন ওই ইউপি সদস্য (মাহমুদুর রহমান রাজু)।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় তিন বাসিন্দা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য রাজুর এলাকা রতনপুর গ্রামের অনেক স্থানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে জনসাধারণকে। কিন্তু তার সেদিকে লক্ষ্য নেয়। ঘটনাস্থলে খালের নালার পাশে তার জমি রয়েছে। সেখানে তিনি ভবিষ্যতে বাড়ি করবেন। এজন্যই তিনি সরকারি বরাদ্দের টাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। জনসাধারণ কখনোই এ ব্রিজ ব্যবহার করতে পারবে না। ব্যক্তিগত স্বার্থেই রাজু ব্রিজটি করিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট কার্যালয় সূত্র জানা যায়, ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের বরাবর লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের বরাদ্দে উন্নয়নমূলক কাজের চিঠি ইস্যু করা হয়। এটি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ১ম কিস্তির প্রকল্প ছিল। ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর কর্তৃক স্মারক প্রদান করা হয়। ওই তালিকার ২৯ নম্বরে মান্দারী স্কুল রোড হারুনের বাড়ির পাশে ব্রিজটি নির্মাণে ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইস্যুকৃত ওই চিঠিতে ১৪ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন সই করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মাহবুবুর রহমান রাজু বলেন, আমিতো কাজ করেছি। অনেকে কাজ না করেই বিল উত্তোলন করে নিয়ে যান। তাদের নিয়ে কোনো সংবাদ হয় না। এখন আমারটা নিয়ে মাতামাতি কেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ক্ষিপ্ত হয়ে জনসম্মুখে ইউপি সদস্য রাজু বলেন, কাজের আগেই আমি বিল পেয়ে গেছি। পিআইও আমাকে বিল দিয়ে দিয়েছেন। নিউজ করে কোনো লাভ নেই।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি ব্রিজটির প্রকল্প পরিবর্তন করার জন্য। কিন্তু বরাদ্দটি সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের ছিল। উনি মারা গেছেন। তার স্বাক্ষর ছাড়া পরিবর্তনের সুযোগ নেই। আর কাজ না করে বিল নেয়ারও সুযোগ নেই।
Posted ৬:৫৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৮ মার্চ ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin