বৃহস্পতিবার ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪ | প্রিন্ট

বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশের ইতিহাসে বিদেশি ঋণের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়ালো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল শেষে সামগ্রিক বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) এ ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৭ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এসব ঋণের ৭৯ শতাংশই নিয়েছে সরকার এবং বাকি ২১ শতাংশ ঋণ নিয়েছে বেসরকারি খাত।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫২ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৪১২ কোটি ডলার।

গত বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদন অনুসারে ১৫ বছর আগে ২০০৮ সাল শেষে ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। অর্থাৎ গত ১৫ বছরে দেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৭৭ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৩৪২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ৯ হাজার ৬৫৫ কোটি ডলার। তার মানে পরের তিন মাসে ৪ বিলিয়ন বা ৪০৯ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ বেড়েছে। এই সময়ে সরকার ৪৪২ কোটি ডলারের বিদেশি ঋণ নিয়েছে। তার বিপরীতে বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি কমেছে ৬৪ কোটি ডলারের।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে তা দাঁড়ায় ৯৮ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ ৮ বছরে দেশের বিদেশি ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। গত ডিসেম্বর শেষে এর পরিমাণ আরো বেড়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১৮ সালের পর বিদেশি ঋণ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৮ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৮১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলারে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ ঋণের পরিমাণ ৯৫ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৯৮ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। আর গত বছর শেষে এ ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলার।

বিদেশি এসব ঋণ এসেছে মূলত বিভিন্ন মেগা প্রকল্প নির্মাণের জন্য। এসব প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মাসেতুর রেল সংযোগ প্রকল্প, মেট্রোরেল (লাইন-৬), হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ ইত্যাদি।

সরকার বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মতো সংস্থা এবং জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারতের মতো দেশের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি বিদেশি ঋণ নেয়। এসব ঋণ নেয়া হয় মূলত প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বাজেট সহায়তা হিসেবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গত ডিসেম্বরের হিসাবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ঋণদানে শীর্ষ দেশ ও সংস্থার মধ্যে ছিল বিশ্বব্যাংক, জাপান, এডিবি ও চীন। সাম্প্রতিককালে চীনা ঋণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

বিদেশি অর্থায়নে বেশ কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্প, মেট্রোরেল (লাইন-৬), হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ ইত্যাদি।

Facebook Comments Box
advertisement

Posted ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪

ajkerograbani.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

সম্পাদক ও প্রকাশক
মুহা: সালাহউদ্দিন মিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়

২ শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণি, মগবাজার, ঢাকা-১২১৭। সম্পাদক কর্তৃক তুহিন প্রেস, ২১৯/২ ফকিরাপুল (১ম গলি), মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।

ফোন : ০১৯১৪৭৫৩৮৬৮

E-mail: [email protected]