নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট
প্রবাসী আয় ও রফতানি আয়ে শ্লথগতি এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়ে যাওয়ায় দেশের রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে। এ অবস্থায় ঘাটতি মেটাতে বাজেট সহায়তার দিকেই মনোযোগী ছিল সরকার। আশা ছিল চীনের কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ইউয়ান ঋণ পাওয়া যাবে। তবে চীন থেকে বাংলাদেশ কাঙ্খিত সেই পরিমাণ ঋণ পায়নি। চীন থেকে মাত্র এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহায়তার ঘোষণা এসেছে। এতে করে দেশের রিজার্ভ নিয়ে যে সংকট চলছে, তা থেকেই যাচ্ছে। চীন থেকে বাংলাদেশ কাঙ্খিত ঋণ বঞ্চিত হওয়ায় স্বভাবতই এখন প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিষয়টি বেশ শক্তভাবে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেইজং সফরকে কেন্দ্র করে ঢাকার ব্যাপক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যাশার তুলনায় প্রাপ্তি খুবই সামান্য। মূলত নয়াদিল্লির প্রতি ‘অতিরিক্ত ঝুকেঁ পড়ার’ কারণেই বেইজিং মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
যদিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সফরকে সফল হিসেবেই দেখছেন। সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে রোববার গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চীন সফরে ২১টা লিখিত চুক্তি হলো, এত কিছু হলো। বাংলাদেশে বিশেষ পর্যটন অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, রিয়েল এস্টেট এবং হসপিটালিটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন চীনের ব্যবসায়ীরা। এ সফর থেকে অপ্রাপ্তির কিছুই নেই। এতকিছুর পরও কেউ কেউ বলে বেড়াচ্ছেন এ সফরে কিছুই পাইনি। তারা কেন বলে বেড়াচ্ছেন, তা ঠিক জানি না। আমাকে বিব্রত করতে, অপমানিত করতে তারা এগুলো ছড়াচ্ছেন কি না জানি না।
শেখ হাসিনা বলেন, চীনে বাংলাদেশ দূতাবাস, বিডা, বিএসইসি এবং চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং আয়োজিত এ সম্মেলনে চীনের ভাইস মিনিস্টার অব কমার্স লি ফেই, চায়না কমিউনিকেশনস কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওয়াং টং ঝু, এইচএসবিসি চায়নার প্রেসিডেন্ট ও সিইও মার্ক ওয়াং, হুয়াওয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইমন লিন বক্তব্য দেন এবং তাদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। এই সম্মেলনে বাংলাদেশের ১০টি কোম্পানির প্রতিনিধির সঙ্গে চীনের বিভিন্ন কোম্পানির ১৬টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই হয়।
চীন সফর সংক্ষিপ্ত করার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দ্বিপাক্ষিক সফরে আমি গত ৮ থেকে ১০ জুলাই চীন সফর করি। ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছালে বিমানবন্দরে আমাকে লাল গালিচা সংবর্ধনার মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়। ৯ জুলাই সকালে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এআইআইবিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, নদী খনন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ উপযোগী খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই আমি।’
এদিকে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেইজিংয়ের অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি শূন্য। যদিও এ সময়টিতেই ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনীতির নানামুখী সংকটের মোকাবিলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। প্রধানমন্ত্রীর সদ্য সমাপ্ত চীন সফরের মধ্য দিয়ে দেশটি থেকে অর্থনৈতিক সহায়তা পাওয়ার নতুন পথ তৈরি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। জানা গেছে, বেইজিং সফরের আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তঃ মন্ত্রণালয় সভা হয়। সেই সভায় বেইজিংয়ের কাছে ২০ বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ চাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এছাড়া আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনা বিনিয়োগের প্রত্যাশা ছিল ঢাকার। কিন্তু সেই তুলনায় তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। ২০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিপরীতে সহায়তা পাওয়া গেছে মাত্র ১৫০ মিলিয়ন ডলারের। অথচ ২০১৬ সালে তিন দশক পর ঢাকা সফরকালে ২৫ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
স্বভাবতই প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর শেষে বিষয়টি কারণ বিশ্লেষণ করছেন অনেকে। বাংলাদেশ ও চীনের গণমাধ্যমের পাশাপাশি ভারতীয় গণমাধ্যমেও বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সফর সংক্ষিপ্ত করে আগেই চলে আসার মধ্যেও ভিন্নরকম অর্থ খোঁজা হচ্ছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে গত ১৩ জুলাই বলা হয়, চীন সফরের আগে ঢাকাকে ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বেইজিং। কিন্তু সফরের চূড়ান্ত ফলাফল ১০০ মিলিয়ন ডলার।
১২ জুলাই ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে অর্থনৈতিক ইস্যুতে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সফরকালে উল্লেখযোগ্য প্রটোকল না পাওয়ার বিষয়টিও চোখে লেগেছে।
২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর ৩০ বছরের মধ্যে কোনো চীনা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করেন এবং ২৫ বিলিয়ন ডলারের সহযোগিতার কথা বলা হয় দেশটির পক্ষ থেকে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হতে থাকে বাংলাদেশ। সেই সম্পর্ক কেন হঠাৎ ‘খারাপ’ হলো তা নিয়ে এখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বিশ্লেষণ করছেন।
এসব বিশ্লেষণের সারকথা একটাই- নয়াদিল্লির দিকে অতিমাত্রায় ঝুকেঁ পড়ার কারণেই নাখোশ বেইজিং। নাখোশ হওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে- যখনই বেইজিং দেখল ঢাকা অতিমাত্রায় দিল্লির দিকে ঝুঁকছে তখনই আস্তে আস্তে বেইজিং নাখোশ হতে থাকে। এর প্রমাণ ২০২৩ সালের শুরু থেকে বাংলাদেশে নতুন কোনো বড় প্রকল্পে সেভাবে চীনা বিনিয়োগ আসেনি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
যদিও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, ঢাকা দীর্ঘদিন থেকেই নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে ভারসাম্য রেখে চলার কূটনীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু এখন এই ভারসাম্য রক্ষা করে চলা কঠিন হয়ে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান দ্যা ইনস্টিটিউট ফর পলিসি, অ্যাডভোকেসি এবং গভর্নেন্স (আইপিএজি), ভারতের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনীর খসরু এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে দুটি আঞ্চলিক পরাশক্তি ভারত ও চীনের মধ্যে একটি সতর্ক ভারসাম্য বজায় রাখা হয়েছে। কৌশলগত স্বার্থ বজায় রেখে অর্থনৈতিক সুবিধা সর্বাধিক করার লক্ষ্যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই নীতি পরীক্ষা করা হয়েছে। যাইহোক, এই সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের ফলাফল ইঙ্গিত দেয় যে, ভারসাম্যমূলক প্রচেষ্টা প্রত্যাশিত ফলাফল নাও দিতে পারে।’
ভারতের থিংকট্যাক প্রতিষ্ঠান আইপিএজি, ভারতের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুনীর খসরু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় লেখা নিবন্ধে বলেন, দিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা দিনদিন ঢাকার জন্য কঠিন হয়ে উঠছে। ঢাকার সামনে কঠিন এক পথ অপেক্ষা করছে। বাংলাদেশের ভারত-চীন ভারসাম্য চেষ্টা ক্রমবর্ধমানভাবে অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। যদিও চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা উন্নয়ন লভ্যাংশ এনেছে, পাশাপাশি এটি ঋণ নির্ভরতা ও কৌশলগত দুর্বলতার বিষয়ে উদ্বেগও উত্থাপন করেছে। দক্ষিণ এশিয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ বাংলাদেশের নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখা ক্রমশ কঠিন করে তুলেছে।
সরকারের অনেকেও পররাষ্ট্রনীতির ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জটি অস্বীকার করছেন না। সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া মনে করেন-‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি যে ভারসাম্য রক্ষা করার কথা, সেভাবে হচ্ছে না। বরং পররাষ্ট্রনীতিতে কোনো আঞ্চলিক শক্তির প্রতি অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যার জন্য চীনের কাছ থেকে যে পরিমাণ সহযোগিতা পাওয়ার কথা ছিল তা অনিশ্চয়তার দিকে গেছে।’
সাবেক এই শিল্পমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনগুলোতে চীন বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প যাচাই করার জন্য আসবে। তখন যদি বাংলাদেশ সাহসী অবস্থান নিতে না পারে তাহলে অতীতে যেভাবে গভীর সমুদ্রবন্দর ঝুলে গেছে, তিস্তা প্রকল্পও সেভাবে ঝুলে যাবে।’
যদিও বাংলাদেশ অংশে তিস্তা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মহাপরিকল্পনার প্রকল্প ভারতেরই করা উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘চীন তো রেডি, কিন্তু আমি চাচ্ছি যে এটা ইন্ডিয়া করুক, এই প্রজেক্টটা করলে এই প্রজেক্টের জন্য যা দরকার, ভারত দিতেই থাকবে। ঠিক আছে? যা সাফ সাফ কথা, রাখা ঢাকা নাই।‘
চীন সফর নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করা ওই সংবাদ সম্মেলনেই এমন কথা বললেন শেখ হাসিনা। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের আগ্রহের কথা সবার জানা। চলতি বছরের জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠনের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘তিস্তা নদী প্রকল্পের বিষয়ে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের দিক থেকে প্রকল্প প্রস্তাব পেলে চীন তা বিবেচনা করবে এবং সহযোগিতা দেবে। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখব।’ তিস্তা নিয়ে চীনের আগ্রহ মূলত কৌশলগত। এ প্রকল্পটিকে চীন ভূ-রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে। হিমালয়ে উৎপত্তির পর তিস্তা নদী ভারতের সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। দুই দেশের অর্থনীতির জন্যই এ নদী বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের আগ্রহী হয়ে ওঠার বড় কারণ হচ্ছে তাদের ‘বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ বা বিআরআই প্রজেক্ট। বিআরআই প্রকল্পের মাধ্যমে চীন এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকা মহাদেশকে একই সুতোয় গাঁথতে চাইছে। চীনের বিআরআই প্রকল্পের আওতাধীন বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর। প্রস্তাবিত এই করিডোরের মাধ্যমে চীন তাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ইউনান প্রদেশকে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাথে যুক্ত করতে চায়। এজন্য তিস্তা বহুমুখী প্রকল্পকে চীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে।
অপরদিকে ভৌগলিক কারণে ভারতেরও নজর রয়েছে প্রকল্পটির দিকে। ভারত মনে করে, চীন তাদের বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে ভারতকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলতে চায়। এমন পরিস্থিতিতে এক দিকে ঝুকে পড়া কতটা কল্যাণকর হবে সে বিষয়েও আলোচনা রয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে। অনেকের মতে, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এবং নিজস্ব জনবল দিয়েই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। ১৯৯০ সালের জুলাই মাসের মধ্যে তিস্তা ব্যারেজের নির্মাণ কাজ শেষ করা হয় বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এবং বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের দ্বারাই। এছাড়া বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতুও নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে এদিক ওদিক যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
Posted ৭:৪১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৫ জুলাই ২০২৪
ajkerograbani.com | Salah Uddin